ডাকসুতে জয়ী না হলেও প্রতিদ্বন্দ্বীদের শুভকামনা মির্জা গালিবের
আপডেটঃ ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে ভিপি, জিএস এবং এজিএস—তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদেই জয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরা। ফলে এবারের ডাকসু নির্বাচনে বড় ধরনের সাফল্য পেয়েছে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট।আনুষ্ঠানিক ফলাফলে দেখা গেছে, ঢাবির ১৮টি হলের মোট ভোটে ভিপি পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থী সাদিক কায়েম সর্বাধিক ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পান ৩ হাজার ৮৮৪ ভোট এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা পান ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট।
জিএস পদেও জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী এস এম ফরহাদ। তিনি ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের তানভীর বারী হামিম পান ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। প্রতিরোধ পর্ষদের প্রার্থী মেঘমল্লার বসু পান ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট।এজিএস পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মুহা. মহিউদ্দীন খান বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। তিনি পান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পান ৫ হাজার ৬৪ ভোট। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের প্রার্থী আশরেফা খাতুন পান ৯০০ ভোট।এদিকে নির্বাচনে জয়ী না হলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব। বুধবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেন, “আবিদ-হামিম-মায়েদের জন্য শুভকামনা। ছাত্রদলের রাজনীতিতে এরা বড় ভূমিকা পালন করুক সামনের দিনে—এই আশা করি।”
তিনি আরও লেখেন, সিনিয়রদের মধ্যে কেউ যদি আন্তরিকভাবে দিকনির্দেশনা দেন, তাহলে এরা ভবিষ্যতে ভালো রাজনীতিবিদ হয়ে উঠতে পারবেন।এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে দেওয়া আরেক পোস্টে মির্জা গালিব শিবির সমর্থকদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি লেখেন, “ডাকসুতে শিবিরের সমর্থিত প্যানেল ভালো করলেও অহংকারী আচরণ করবেন না। লম্বা-চওড়া স্লোগান না দিয়ে মানুষের মন বুঝুন। তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশপন্থি, ইসলামপন্থি, ভালো ছাত্র, ভালো মানুষ, ভালো নেতা—এমন প্রার্থীকেই ভোট দিতে চাইছে। তারা পরিবর্তন চাইছে, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি থেকে মুক্তি চাইছে।”
তিনি আরও পরামর্শ দেন, “সকল সংকোচ কাটিয়ে মেয়েরা ভোট দিচ্ছে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ভোট দিচ্ছে। তাদের এই আস্থার সামনে বিনয়ী হয়ে থাকুন। গালাগালির জবাবে চুপ থাকুন, অভদ্রতার জবাবে ভদ্রতা দেখান।”ডাকসুর এই নির্বাচনে ভিপি, জিএস ও এজিএস—সবকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীদের জয় প্রমাণ করেছে যে ক্যাম্পাসের ভোটাররা পরিবর্তনের বার্তা দিতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদেরও সম্মান দেখানো ও তাদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
IPCS News : Dhaka :