শনিবার ২রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে রেলওয়ের মহাপরিচালকে অপসারণের সিদ্ধান্ত

আপডেটঃ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ | আগস্ট ০২, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ভয়াবহ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আফজাল হোসেনকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের সুত্রে জানা গেছে।সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই নতুন ডিজি নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে।তবে বিস্ময়করভাবে, একই প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ও বহুল আলোচিত প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আরা কেয়ার বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।বিষয়টি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভেতরেই ক্ষোভ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।সরকারের অডিট অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্পটিতে দুর্নীতি ও অপচয়ের কারণে সরকারের প্রায় ১৩,৩৬১ কোটি ৫২ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।২০১৬ সালে একনেকে অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৩৪,৯৮৯ কোটি টাকা।কিন্তু মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে, ২০১৮ সালে প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ৩৯,২৪৭ কোটি টাকা করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুতিতে চীনা ঠিকাদারদের পরোক্ষ প্রভাব ছিল এবং দর যাচাই ছাড়া কাজ দেওয়া হয়, যা সরকারি নীতিমালার পরিপন্থী।এর ফলে প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কার্যত অনুপস্থিত ছিল।এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্ত চলমান রয়েছে।নাজনীন আরা কেয়া বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রথম নারী প্রকৌশলীদের একজন।

তিনি প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে একাধিক বড় প্রকল্পের দায়িত্ব পালন করেছেন—যার মধ্যে রয়েছে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এবং ঢাকা-টঙ্গী ডুয়েল গেজ প্রকল্প।যদিও এসব প্রকল্প ঘিরে অনিয়মের একাধিক অভিযোগ রয়েছে, তবুও তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

রেল মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীন সূত্র বলছে, কেয়া ও তৎকালীন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের মধ্যে পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা ছিল, যার ফলে তাকে বারবার গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়।এ বিষয়ে রেল মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ডিজিকে সরিয়ে দেওয়া হলেও প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া অত্যন্ত রহস্যজনক।এতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে।

দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পে রেল খাত অন্যতম বড় ব্যয়ের উৎস।কিন্তু এ খাতে দুর্নীতি ও জবাবদিহিতার অভাব ক্রমেই প্রকট হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।সচেতন মহলের আশঙ্কা, তদন্তাধীন ব্যক্তিরা যদি রাজনৈতিক বা পারিবারিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে শাস্তির আওতার বাইরে থেকে যান, তাহলে রাষ্ট্রীয় প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও সুশাসনের আশা অলীক হয়ে যাবে।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।