ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় শেয়ারবাজারে ঝড়, বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক
আপডেটঃ ১:৩১ অপরাহ্ণ | জুলাই ০৮, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা শেয়ারবাজারে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।চীনের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলশ্রুতিতে মার্কিন শেয়ারবাজারে তীব্র ধস নামে।ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চীন থেকে আমদানি করা প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।এই ঘোষণার পর বাজারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ডাও জোন্স সূচক ১,২০০ পয়েন্টেরও বেশি পড়ে যায়, যা গত এক বছরে সবচেয়ে বড় একদিনের পতন বলে মনে করা হচ্ছে।একই সঙ্গে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক কম্পোজিট সূচকেও যথাক্রমে ৫ ও ৭ শতাংশ পতন দেখা যায়।
এই ধস শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। ইউরোপ ও এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোও এই খবরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। লন্ডনের এফটিএসই, টোকিওর নিক্কেই এবং শাংহাই কম্পোজিট সূচকগুলোতে বড় ধরনের পতন দেখা যায়। চীন, যাদের ওপর মূলত এই শুল্কের প্রভাব পড়বে, তাদের বাজারে বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই ধরনের শুল্ক আরোপ আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইনে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন ভোক্তাদের ওপরই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কারণ, অতিরিক্ত শুল্কের ফলে চীনা পণ্যের দাম বাড়বে এবং তা সরাসরি ভোক্তাদের ব্যয়বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি মার্কিন রপ্তানিকারকরাও চীনের পাল্টা শুল্কের মুখে পড়তে পারেন, যা তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকে কমিয়ে দেবে।
এই ঘটনায় মার্কিন শেয়ারবাজারের পাশাপাশি বৈশ্বিক বিনিয়োগ পরিবেশে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অনেক বিনিয়োগকারী নিরাপদ বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছেন, বিশেষ করে সোনা ও সরকারি বন্ডের দিকে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এই বাণিজ্য উত্তেজনা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান না হয়, তবে এটি পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকেও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকেরা পরিস্থিতিকে ২০১৮-১৯ সালের মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের সময়ের সঙ্গে তুলনা করছেন, কিন্তু তারা বলছেন এবার পরিস্থিতি আরও জটিল, কারণ বৈশ্বিক অর্থনীতি এখনো কোভিড পরবর্তী মন্দা কাটিয়ে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এই অবস্থায় নতুন করে বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকি গোটা বিশ্বকে এক অনিশ্চিত অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
IPCS News : Dhaka :