চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাগরে ট্র্যাজেডি: একজন মৃত, দুইজন নিখোঁজ
আপডেটঃ ১:২০ অপরাহ্ণ | জুলাই ০৮, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রের সমুদ্রে গোসল করতে নেমে ভেসে যাওয়ার ঘটনায় এক ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, এবং বাকি দুইজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টে সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে।প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ওই তিন শিক্ষার্থী সাগরের ধারে এসে আনন্দ করছিলেন এবং পরে সাগরে গোসল করতে নামেন।সমুদ্রের ঢেউ তখন ছিল অত্যন্ত উত্তাল।তারা গোসল করতে গিয়ে ধীরে ধীরে গভীর পানিতে পৌঁছে যান এবং হঠাৎ এক পর্যায়ে প্রবল স্রোতের টানে ভেসে যেতে শুরু করেন।
সাথে থাকা অন্যান্য পর্যটকরা চিৎকার করে স্থানীয় প্রশাসন ও লাইফগার্ডদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে, তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে মো. রায়হান উদ্দিন (২২) নামে একজন ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।রায়হান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন।তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।বাকি দুই ছাত্রের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।তারা এখনও সাগরের পানিতে নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস এবং কোস্ট গার্ডের যৌথভাবে গঠিত উদ্ধারকারী দল রাতেও অভিযান চালিয়ে গেছে। তবে সাগরের উচ্চ জোয়ার ও অন্ধকারের কারণে অভিযান ব্যাহত হয়।
রায়হানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সহপাঠীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গভীর শোক প্রকাশ করে দ্রুত উদ্ধার অভিযান জোরদারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের দ্রুত সন্ধান কামনা করেছেন।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কক্সবাজার সৈকতে সতর্ক সংকেত না মেনে অনেকে সাগরে নেমে পড়েন, যা প্রাণঘাতী হতে পারে। পর্যটকদের প্রতি বারবার সতর্কবার্তা দিলেও অনেকেই তা উপেক্ষা করেন। এ ঘটনার পর সৈকতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এদিকে রায়হানের মরদেহ তার পরিবারকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রায়হান ছিলেন পরিবারের একমাত্র ছেলে এবং অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী। তার এই অকাল মৃত্যুতে পরিবার ও বন্ধুদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর সন্ধানে মঙ্গলবার সকাল থেকে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের খোঁজ না মেলে, ততক্ষণ অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
IPCS News : Dhaka :