সময় সংকটে মধ্যরাতে অনুষ্ঠিত নারী ফুটবল দলের ঐতিহাসিক সংবর্ধনা
আপডেটঃ ১:৫০ অপরাহ্ণ | জুলাই ০৭, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ
গতকাল রাতের হাতিরঝিল আম্ফিথিয়েটারে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি ছিল বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের জন্য এক স্মরণীয় মুহূর্ত। মিয়ানমার থেকে ফেরার পর তারা রাত প্রায় ২টার দিকে ঢাকায় পৌঁছান এবং সরাসরি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।রাত ৩টা ১৫ মিনিটে বাফুফে নির্বাহী কমিটির সদস্যরা ফুলের তোড়া দিয়ে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। এই সংবর্ধনা আয়োজন করা হয় দেশের নারী ফুটবল দলের অর্জিত ঐতিহাসিক সফলতা উদযাপনের জন্য।
মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকে ৭-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো মূল পর্বে বাংলাদেশের জায়গা নিশ্চিত হয়।যদিও তিনদিন আগে থেকেই এশিয়ান কাপের জন্য বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।এই সফলতা দেশের ফুটবল ইতিহাসে একটি বিশেষ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।এই সুযোগে তাদের সম্মান জানাতে বাফুফে মধ্যরাতে এমন আয়োজন করে, যা ছিল সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে অপরিহার্য।সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক, উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল, দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার, ফরোয়ার্ড ঋতুপর্ণা চাকমা এবং কোচ পিটার বাটলার। বক্তারা নারী ফুটবল দলের এই অভাবনীয় সাফল্যে দেশের মানুষের গর্ব ও উচ্ছ্বাসের কথা তুলে ধরেন এবং দেশের ক্রীড়া অঙ্গনের জন্য এটি একটি অনন্য উদাহরণ উল্লেখ করেন।
সংবর্ধনার সময় জানা গেছে, ঋতুপর্ণা ও মনিকা চাকমা খুব শিগগিরই ভুটানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, আর দলের আরও তিনজন সদস্যও কয়েক দিনের মধ্যে দলের বাইরে যাচ্ছেন। তাই সবার উপস্থিতিতে এই ঐতিহাসিক অর্জনকে সম্মান জানাতে দ্রুত এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এই সময়সূচির কারণে সংবর্ধনা রাতের অল্প গভীরে অনুষ্ঠিত হলেও এটি ছিল দেশবাসীর জন্য এক অনবদ্য প্রেরণার উৎস।
এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের নারী ফুটবল দলের সদস্যরা দেশের সমর্থক ও ভালোবাসাকে অনুভব করেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার বলেন, “আমরা দেশের মানুষের ভালোবাসা ও উৎসাহে আরও বড় সাফল্যের লক্ষ্যে কাজ করে যাবো।” কোচ পিটার বাটলারও দলের পরিশ্রম এবং একতার প্রশংসা করেন এবং দেশের ফুটবলের জন্য এই অর্জনকে বড় ধাক্কা হিসেবে উল্লেখ করেন।
এই ঘটনা শুধুমাত্র এক দল বা এক সেক্টরের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন হিসেবে বিবেচিত হবে।যেখানে রাতের নিরবতা ভেঙে উঠল এক ক্রীড়াবিদ দল, যারা তাদের প্রতিভা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের জন্য গৌরবের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। দেশের যুব সমাজের জন্য এটি একটি শক্তিশালী প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে, বিশেষ করে ক্রীড়া ও নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে।
অতএব, মধ্যরাতের এই সংবর্ধনা আয়োজন ছিল কেবল একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং দেশের ক্রীড়া অঙ্গনে নারীদের শক্তি ও সম্ভাবনার এক স্বীকৃতি। এই সাফল্য দেশের ক্রীড়া মানচিত্রে নতুন এক অধ্যায় যোগ করেছে, যা আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে আরও অনেক বড় অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে।এভাবেই বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল তাদের প্রতিভা ও দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে একটি নতুন ইতিহাস গড়েছে, এবং দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে।
IPCS News : Dhaka :