শুক্রবার ৪ঠা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ২০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

দেশীয় লিগে আন্তর্জাতিক ছোঁয়া, বিপিএলে আসছে পেশাদার ব্যবস্থাপনা

আপডেটঃ ১২:১৪ অপরাহ্ণ | জুলাই ০৩, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

ঢাকা, ৩ জুলাই ২০২৫ – বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনে বড় এক পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) আগামী মৌসুমে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) এবং বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের সঙ্গে পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি করা হবে। এ বছরের শুরুতে পুরনো সব ফ্র্যাঞ্চাইজি চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বিসিবি সম্পূর্ণ নতুনভাবে বিপিএলকে সাজাতে চায়।

আগস্টে ‘Expression of Interest (EOI)’ আহ্বান জানানো হবে, যার মাধ্যমে আগ্রহী বিনিয়োগকারীরা বিপিএলের নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক হতে আবেদন করতে পারবে। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে চূড়ান্ত মালিকদের তালিকা ঘোষণা করা হবে। বিসিবি জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সাত থেকে আটটি ফ্র্যাঞ্চাইজি বেছে নেওয়া হবে, যারা আগামী পাঁচ বছর বিপিএলে অংশগ্রহণ করবে। নতুন চুক্তিগুলো হবে স্বচ্ছ ও পেশাদার ভিত্তিতে, যাতে খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনা, ফ্র্যাঞ্চাইজি দায়িত্ব ও আর্থিক স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা যায়।

বিসিবি এবার বিপিএলকে আরও পেশাদার পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায়। এজন্য তারা একটি আন্তর্জাতিক মানের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এই প্রতিষ্ঠান বিপিএলের বিপণন, সম্প্রচার, ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ও স্পন্সরশিপ দেখভাল করবে। এতদিন ধরে নানা জটিলতা, স্বল্পমেয়াদী চুক্তি ও স্বচ্ছতার অভাবে বিপিএল কাঙ্ক্ষিত উচ্চতায় পৌঁছাতে পারেনি। নতুন মডেলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও মালিকদের মধ্যে দায়বদ্ধতা তৈরি হবে বলে মনে করছেন বোর্ড কর্মকর্তারা।

এই রি-স্ট্রাকচারিংয়ের প্রক্রিয়ায় শুধু ফ্র্যাঞ্চাইজিই নয়, ভেন্যু নিয়েও বড় পরিবর্তন আসতে পারে। খুলনা ও বগুড়া স্টেডিয়ামগুলোর বর্তমান অবস্থা নিয়ে বিসিবি পর্যালোচনা করছে। এই দুই ভেন্যু যদি আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের মানদণ্ড পূরণ না করতে পারে, তাহলে বিপিএলের ম্যাচ সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিকল্প ভেন্যু যেমন সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা নিয়েই পুরো মৌসুম পরিচালনা করা হতে পারে।

এদিকে, এই পুনর্গঠনের প্রভাবে বিপিএলের প্লেয়ার ড্রাফট আয়োজনও পিছিয়ে গেছে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগস্টে ড্রাফট আয়োজন হতো, কিন্তু এখন সেটি অক্টোবর মাসে হবে। কারণ, নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের নির্বাচন ও তাদের প্রস্তুতির জন্য বোর্ডকে সময় দিতে হবে। নতুন দলগুলো নিশ্চিত হওয়ার পরেই তারা প্লেয়ার ড্রাফটে অংশ নিতে পারবে। বিসিবি আশা করছে, অক্টোবরের মধ্যেই ড্রাফট আয়োজন শেষ করে নভেম্বর থেকে বিপিএলের প্রস্তুতি শুরু করা যাবে এবং জানুয়ারিতে নির্ধারিত সময়েই প্রতিযোগিতা শুরু হবে।

সার্বিকভাবে, সেপ্টেম্বর মাসটি হতে যাচ্ছে বিপিএলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘমেয়াদি ফ্র্যাঞ্চাইজি চুক্তি, পেশাদার ব্যবস্থাপনা, আন্তর্জাতিক মানের ইভেন্ট আয়োজন ও টেকসই কাঠামোর মাধ্যমে বিপিএল নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। বিসিবি মনে করছে, এই পরিবর্তন শুধু দেশের ক্রিকেটকে আরও শক্তিশালী করবে না, বরং বিদেশি খেলোয়াড়, স্পন্সর ও বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ বাড়াবে। দীর্ঘ সময় ধরে অব্যবস্থাপনা ও ক্ষণস্থায়ী সিদ্ধান্তের কারণে বিপিএলের প্রতি কিছুটা অনাস্থা তৈরি হয়েছিল, নতুন রূপে সেই আস্থার জায়গা ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যেই এগোচ্ছে বিসিবি।

সবকিছু ঠিকঠাকভাবে হলে, ২০২৫ সালের বিপিএল হবে সবচেয়ে পরিকল্পিত ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ আসরগুলোর একটি। ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য এটি এক নতুন প্রত্যাশার শুরু হতে পারে।

IPCS News : Dhaka :