রাজশাহীর আলোচিত “গোপনাঙ্গ কর্তন” এস আই এর প্রতি প্রথম স্ত্রীকে হত্যার হুমকির অভিযোগ
আপডেটঃ ৩:২৮ অপরাহ্ণ | মে ২৫, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:- ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) বোয়ালিয়া মডেল থানার মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ইফতেখার আল-আমিনের স্ত্রী কতৃক গোপনাঙ্গ কেটে ফলার রহস্যজনক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।খবর পেয়ে পুলিশ গোপনাঙ্গ কাটা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ভর্তি করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তিকরে।সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার অপারেশন থিয়েটারে কয়েক ঘণ্টা প্রচেষ্টা চালিয়েও গোপনাঙ্গ জোড়া লাগাতে পারেননি।পরে জীবন বাঁচাতে তাকে ডাক্তাররা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার্ড করেন।
পরবর্তী সময়ে আর তার চিকিৎসার আপডেট জানা যায়নি।ঘটনার ৩ বছর পর ২০২৪ সালে শম্পা রোজেন নামের এক টিকটকারকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ইফতেখার।আর জেল থেকে বেরিয়ে নিজেকে নিরপরাধ দাবি করে সুষ্ঠু বিচারের জন্য মানবাধিকার সংগঠনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রথম স্ত্রী।এতেই চটেছেন ইফতেখার ! দিয়েছেন হত্যার হুমকি।
জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মিরপুর মডেল থানায় জিডি করেছেন সালমা দেওয়ান।মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই ঘটনার রাতেই তার স্ত্রী সালমা দেওয়ান ওরফে প্রেয়সী দেওয়ানকে আসামি করে থানায় মামলা করেন ইফতেখারের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান।মালার পর পরই প্রথম স্ত্রীকে গ্রেফতার করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ।এরপর প্রায় ৩ বছর জেলের ঘানি টেনেছেন তিনি।মামলাটি এখনো চলমান।
জামিনে বেরিয়েই নিজেকে নিরাপরাধ দাবি করে মানবাধিকার সংগঠনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও যাচ্ছেন তিনি।বাবার দেওয়া স্বর্ণ ও অর্থ ফিরিয়ে পেতে থানায় অভিযোগও দিয়েছেন।সালমা দেওয়ানের অভিযোগ, মিথ্যা অভিযোগে তাকে গ্রেফতারের পরে তার বাবা-মা সামাজিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন হয়ে হার্ট অ্যাটাক মারা গেছেন তার মা।
তিলে তিলে তাদের কষ্ট দিয়ে মারা হয়েছে।এরপর তিনি অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েন।নানা ছলচাতুরিতে জামিন নিতেও বাধা দেওয়া হয় তাকে।সালমা দেওয়ান বলেন, ঘটনার সময় আমি ও আমার মেয়ে বাড়ির বাইরে ছিলাম।বাইরে থেকে এসে দেখি, আমার স্বামী রক্তাক্ত।তাকে জড়িয়ে ধরে আমি চিৎকার দিতে থাকি।আশেপাশের মানুষজন এগিয়ে আসে।
এরপর রামেক হাসপাতালে নিয়ে যাই।রাতে ওই হাসপাতাল থেকে ওসি নিবারণ আমাকে জোর করে থানায় ধরে নিয়ে আসেন।মারধর করে মিথ্যা জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা করেন।স্বামীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, আমার স্বামীর প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলাম, এটা সত্য।কারণ সে পুলিশের পবিত্র পোশাক গায়ে জড়িয়ে এমন কোনো গর্হিত কাজ নেই যা করেনি।
সে মাদকের চালান ধরত। সেটা বাসায় নিয়ে এসে রাখত।সেগুলো বাসা থেকে বিক্রি করা শুরু করল।আমার ঘরে ছোট্ট বাচ্চা।সে ওই মাদক খেয়ে ফেলত।এখানেই থেমে থাকেনি।সে আমাকে ভুল বোঝাতো।আর বাজে মেয়েদের সঙ্গে রাত কাটাতো।যে মেয়েকে সে এখন বিয়ে করেছে, তাকে নিয়ে আমি ওর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও জানিয়েছি।
সে ওই অফিসারের সামনে আমার স্বামীকে চাচা ডেকেছে।এখন তাকেই বিয়ে করেছে।সালমা দেওয়ান আরও বলেন, আমি ওর প্রতি ক্ষুব্ধ থাকলেও কখনোই আক্রমণাত্মক ছিলাম না।আমার দুই মেয়ে।অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আমি নিজেই বাবার বাসায় চলে যাচ্ছিলাম।কিন্তু এরমধ্যে আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হলো।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।তবে আপনারা যদি ওর দ্বিতীয় স্ত্রী সর্ম্পকে (যার সঙ্গে ওর আগে থেকে পরকীয়া সর্ম্পক ছিল) তার বিষয়ে খোঁজ নেন, তাহলে দেখবেন সে কতটা বিকৃত মানসিকতার।আমার ধারণা গোপনাঙ্গ কাটার পেছনে ওর সম্পৃক্ততা আছে।তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, ওই ঘটনার পর আমাকে ডির্ভোস না দিয়েই সে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে।
এটা সে কখনোই করতে পারে না।আমার বাবা-মায়ের দেওয়া ১৬ ভরি সোনার গয়না, সাড়ে ছয় লাখ টাকা এবং আসবাবপত্র ইফতেখায়ের আত্মসাৎ করেছে।এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা পাচ্ছি না।আমি এখন আমার ছোট্ট মেয়েটাকে নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছি।আমি আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘৫ আগস্টের পর ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় ও একটি ফৌজদারি মামলা হয়। বিভাগীয় মামলাটা ক্লোজ হয়ে গেছে। আর ফৌজদারিটা এখনো চলমান। এর মধ্যে তাকে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ এ বদলি করা হয়েছে।এ বিষয়ে আরএমপির এখন আর কিছু বলার নেই।
এ বিষয়ে ইফতেখারের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান বলেন, ওর (ইফতেখার আল-আমিন) বিষয়ে সে নিজেই ভালো বলতে পারবে।আমি কিছু বলতে চাই না।তবে ওর বড় মেয়ে আমার এখানে আছে।দাদা-দাদির সঙ্গে অনেক ভালো আছে।এরপর ফোন কেটে দেন তিনি।এ বিষয়ে জানতে পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ইফতেখার আল-আমিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) জাহাঙ্গীর হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, হত্যার হুমকির যে জিডি সেটি খোঁজ নিয়ে পরে জানাতে পারবো।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।