খালিয়াজুরীতে জমি বিরোধে কৃষকের বোরো ধান নষ্ট, থানায় অভিযোগ দায়ের
আপডেটঃ ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ | জানুয়ারি ১৫, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ
নেত্রকোনা:- নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক কৃষকের দেড় একর জমির বোরো ধান মই দিয়ে নষ্ট করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকের ছেলে পরাগ সরকার। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন খালিয়াজুরি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মকবুল হোসেন।অভিযোগে অভিযুক্তরা হলেন ইছাপুর গ্রামের চানফর মিয়া, তার দুই ছেলে রাকিব মিয়া ও শাকিব মিয়া, এবং চানফর মিয়ার চাচাতো ভাই আঙ্গুর মিয়া।ভুক্তভোগী পরাগ সরকার উপজেলার বলরামপুর গ্রামের দুলাল সরকারের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র ও অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ইছাপুর গ্রামের ছাত্তার মিয়ার কাছ থেকে ৩০ বছর আগে ১ একর ৫০ শতক জমি কিনেছিলেন দুলাল সরকার। তবে কাগজপত্র সংক্রান্ত সমস্যার কারণে জমিটি দলিল করে দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ছাত্তার মিয়া মারা গেলে তার ছেলে আঙ্গুর মিয়া এবং চাচাতো ভাই-ভাতিজারা জমিটি দখলের চেষ্টা শুরু করে। এ নিয়ে একাধিকবার গ্রামে সালিশ হলেও দুলাল সরকারের পক্ষে রায় দেওয়া হয়।গত ডিসেম্বর মাসে দুলাল সরকার ওই জমিতে বোরো ধান রোপণ করেন।তবে ১০ জানুয়ারি সকালে আঙ্গুর মিয়া, চানফর মিয়া এবং তাদের ছেলেরা জমিতে মই দিয়ে রোপণ করা ধান মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেন।এ সময় পরাগ সরকার বাধা দিতে গেলে তাকে মারধরের হুমকি দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়।
ঘটনার বিষয়ে বলরামপুর গ্রামের শহীদ মিয়া, অমিত সরকার এবং সৌরভ সরকার বলেন, “জমি নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু ফসল নষ্ট করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।এটি দেশের ও দশের ক্ষতি।আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা যেত।”ইছাপুর গ্রামের সাধন সরকার বলেন, “ফসল কারও ক্ষতি করেনি।জমি নিয়ে বিরোধ থাকলেও আলোচনায় সমাধান সম্ভব ছিল।এটি কোনো মানুষের কাজ হতে পারে না।”
মেন্দিপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি বাচ্চু মিয়া বলেন, “দুলাল সরকার জমিটি কিনেছেন, এটি এলাকার সবাই জানে।জমি নিয়ে আলোচনা করে সমাধান হওয়া উচিত ছিল।ফসল নষ্ট করা অনৈতিক এবং দেশের সম্পদের ক্ষতি।”ভুক্তভোগী কৃষক দুলাল সরকার বলেন, “ছাত্তার মিয়ার কাছ থেকে জমি কিনে তাকে চিকিৎসার টাকা দিয়েছিলাম।তবে দলিল করার আগেই তিনি মারা যান।এরপর থেকে তার ছেলে এবং পরিবারের লোকজন জমি দখলের চেষ্টা করছে।সম্প্রতি রোপণ করা ধান মই দিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে তারা।”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত আঙ্গুর মিয়া দাবি করেন, “জমির কাগজপত্র আমাদের।তাদের কাছে কাগজপত্র থাকলে দেখাতে বলুন।জমিতে মই দেওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।মেরে ভারতে পাঠানোর অভিযোগও ভিত্তিহীন।”
খালিয়াজুরি থানার ওসি মোঃ মকবুল হোসেন বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি।তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”এ ঘটনায় গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে।পুলিশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে তৎপর।
IPCS News : Dhaka : শহীদুল ইসলাম : নেত্রকোনা।