সোমবার ২৩শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ৯ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

সজিনার ডালে ডালে,সাদা ফুলের সমারোহ

আপডেটঃ ৪:২৮ অপরাহ্ণ | মার্চ ১২, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

প্রাকৃতিক সোন্দর্য নিয়ে সাদা ফুলের বর্ণিল সাজে সেজেছে উত্তরাঞ্চলের বরেন্দ্রভূমি রাজশাহী জেলার সর্বত্র।সজিনার ডালে ডালে,সাদা ফুলের সমারোহ।ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এ বাংলাদেশ।সুজলা সুফলা, শস্য শ্যামল ভরা আমাদের এ বাংলাদেশের একেকটি ঋতুর একেক রুপে ও রঙ নিয়ে হাজির হয়।ঠিক তেমনি আত্রাই উপজেলার বাড়ির আনাচে-কানাচে ও রাস্তার পাশে থাকা সজিনার গাছগুলো থোকায় থোকায় সাদা সাদা ফুলে ভরে উঠেছে।মৌ মৌ করছে চারিপাশ।সজিনা গাছের ডালের গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত ফুল আর ফুল।এ সময় সজিনা গাছের পাতা ঝরে পড়ে।তাই পাতা শুন্য ডালে থোকা থোকা সাদা ফুলের শোভা দেখে সকলেই মহিত হয়।সজিনা বিশ্বের অন্যতম প্রয়োজনীয় একটি বৃক্ষ।অলৌকিক গাছ হিসেবে সজিনা পরিচিত।ইংরেজিতে সজিনার নাম ‘ড্রামস্ট্রিক’ যার অর্থ ঢোলের লাঠি।নামটি অদ্ভুত হলেও এটি অতিপ্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সবজি জাতীয় একটি উদ্ভিদ।

এই সজিনা গাছ থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হন বাড়ির গৃহিনীরা।তারা সজিনা মৌসুমে সজিনা বিক্রি করে হাতের খরচ হিসেবে অর্থ সঞ্চয় করেন।
এ গাছের পাতা, ফুল, ফল, ব্যাকল ও শিকড় সবই মানুষের উপকারে আসে।সজিনার পুষ্টিগুন অনেক বেশি।এ গাছের অনেক গুন থাকায়, এ গাছকে যাদুর গাছ বলা হয়।কাঁচা সবুজ পাতা রান্না করে, ভর্ত্তা করে ও বড়া ভেজে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।

ফল সবজির মতো রান্না করে খাওয়া যায়, ফল পাকলে সে সব ফলের বীজ বাদামের মতো ভেজে খাওয়া যায়।জেলা কৃষি অধিদপ্তর বলছে সজিনা উৎপাদনের সঠিক হিসেব না থাকলেও, জেলায় প্রায় ২০হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় লক্ষাধিক অধিক গাছ আছে।প্রতি বাড়িতে কমপক্ষে ৩/৪ টি গাছ রয়েছে।এসব গাছ বাড়ির পাশে ও ক্ষেতের আইলে লাগানো হয়।গাছে ফলনও বেশি হয়।

যত্ন ছাড়াই এসব গাছ বেড়ে উঠেছে।বাংলাদেশে ২টি জাত আছে সজিনা ও নজিনা।সজিনার ফুল আসে জানুয়ারীতে আর নজিনা ফুল আসে মার্চ মাস থেকে।তবে সব ফুল থেকে ফল হয় না।একটি থোকায় সর্বাধিক ১৫০টি মত ফুল ধরে।ফুল ৪০ সেমি. থেকে ৮০ সেমি. পর্যন্ত লম্বা হয়।ফুল ফুটার ২মাস পর ফল তোলা যায়।একটি বড় গাছে ৪০০ থেকে ৫০০ ফল ধরে।প্রতিটি ফলে ৩০-৪০টি বীজ হয়।

দেশে সাধারণ ডাল কেটে ডাল রোপন করলে সজিনা গাছ তৈরি হয়।সজিনা চাষিরা উচ্চ মূল্য পাওয়ায় সজনের ডাল রোপন করতে উৎসাহিত হয়। বসতবাড়ির আশে পাশে রাস্তার ধারে ক্ষেতের আইলে লাগানো সজিনা গাছ যত্ন ছাড়াই অবহেলার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে।সজিনা পুষ্টি ও ভেজষ গুন সম্পন্ন হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি।

সজিনার ব্যাপক চাহিদা থাকায় এই সবজিটি বাজারে মৌসুমের শুরুর দিকে উচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়।ঠান্ডা-গরম, লবণ, খরা সহিষ্ণু পরিবেশে এই গাছ বাংলাদেশের সর্বত্রই জন্ম নেয়।এই জেলার মাটিতে সজিনা আবাদ ভাল হচ্ছে।জেলার প্রতি বাড়িতে কমবেশি ৫-৬টি করে সজিনা গাছ আছে।এ বছর সজিনা গাছে ব্যাপক ফুল ধরেছে।

বড় ধরণের দূর্যোগ না হলে সজিনার বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে।এই অঞ্চলে উৎপাদিত সজিনা ঢাকাসহ পুরো দেশে চালান হয়।দিন দিন পরিত্যক্ত জায়গায় সজিনা গাছ তৈরির আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।তাই  জেলার উপজেলা গুলোতে সজিনা গাছের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কৃষকরা সজনের উচ্চ মূল্য পাওয়ায় তারা লাভবানও হচ্ছে।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী।