হাইকোর্টের আদেশ জাল করা স্থায়ী ২১ জনকে অব্যাহতি দিয়েছে পশ্চিম রেলের সংস্থাপন দপ্তর
আপডেটঃ ৭:৩১ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ১৭, ২০২১
নিউজ ডেস্কঃ
উচ্চ আদালতের আদেশ জাল করে চাকরি স্থায়ী করার অভিযোগে ২১ অস্থায়ী কর্মচারীকে অব্যাহতি দিয়েছে পশ্চিম রেল কর্তৃপক্ষ।২১ অক্টোবর তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।তবে এর সঙ্গে জড়িত রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। উচ্চ আদালতের আদেশ জাল করার সঙ্গে শুধু দৈনিক মজুরিভিত্তিক ২১ কর্মচারী জড়িত নন।এর সঙ্গে পশ্চিম রেলের প্রধান সংস্থাপন কর্মকর্তার দপ্তরসহ (সিপিও) পশ্চিম রেলের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত।জানা যায়, ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর পশ্চিম রেলের জিএম, চিফ পার্সোনাল অফিসার, (সিওপিএস) ও আইন কর্মকর্তার কাছে উচ্চ আদালত থেকে একটি আদেশ আসে।এতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন শাখায় কর্মরত দৈনিক মজুরিভিত্তিক ২১ কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণের আদেশ ছিল।দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী মিলন বিশ্বাসের করা রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের আদেশটি দিয়েছেন বলে কাগজে উল্লেখ ছিল।
এর কিছুদিন পর একই বিষয়ে উচ্চ আদালতের আরেকটি আদেশ রেল ভবনে আসে।এতে বলা হয়, আগের আদেশ পরিপালন না হওয়ায় আদালত অবমাননা হয়েছে।সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, তা হাজির হয়ে আদালতকে জানাতে বলা হয়।এদিকে এসব আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিম রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দৈনিক মুজরিভিত্তিক ২১ কর্মচারীর চাকরি স্থায়ীকরণের আদেশ জারি করেন।
জাতীয় বেতন স্কেলের সংশ্লিষ্ট গ্রেডভুক্ত করে সব সুবিধাদি প্রদানের নির্দেশপত্র জারি করেন পশ্চিম রেলওয়ের চিফ পার্সোনাল অফিসার (সিওপিএস) আমিনুল হাসান।এরপর থেকে আলোচিত ২১ কর্মচারী জাতীয় বেতন গ্রেড স্কেলে বেতনভাতাদিসহ সব সুবিধা পেয়ে যান।পশ্চিম রেলের আইন কর্মকর্তা আল মাহমুদ বলেন, চলতি বছরের ২ মার্চ একই বিষয়ে উচ্চ আদালত থেকে আরেকটি আদেশ আসে।
তিনি বলেন, আগের আদেশটি ভুয়া ছিল বলে প্রথমে আমাদের সন্দেহ হয়েছিল।ফলে খোঁজখবর নিতে শুরু করি আমরা।এরই মধ্যে একই বিষয়ে উচ্চ আদালত থেকে আরেকটি আদেশ এলে আমরা দ্রুত হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে খোঁজ নিই।এতে দেখা যায়, উচ্চ আদালত থেকে আসা আগের দুটি আদেশ ভুয়া ছিল।বিষয়টি আমরা তাৎক্ষণিকভাবে উচ্চ আদালতকে অবহিত করি।
কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উচ্চ আদালতের আদেশ জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে ২১ কর্মচারীকে ২১ অক্টোবর অব্যাহতি দেওয়া হয়।একই সঙ্গে স্থায়ী হওয়া পরবর্তী ১০ মাসের বেতনভাতা বাবদ দেওয়া সব অর্থ ফেরত চেয়ে পশ্চিম রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অব্যাহতি দেওয়া কর্মচারীদের পৃথকভাবে চিঠি দিয়েছে।তবে এখন পর্যন্ত তারা কোনো অর্থ ফেরত দেননি।বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ আদালতে অপেক্ষমাণ রয়েছে।
উচ্চ আদালতের আসা আদেশ যাচাই না করেই কীভাবে সংস্থাপন বিভাগ চাকরি স্থায়ীকরণের সুপারিশ দিয়েছে—জানতে চাইলে পশ্চিম রেলের চিফ পার্সোনাল অফিসার (সিপিও) আমিনুল হাসান কোনো প্রশ্নেরই উত্তর দেননি।এ সংক্রান্ত তথ্যাবলি সরবরাহ করতে পশ্চিম রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মিহির কান্তি গুহ তাকে নির্দেশ দিলেও কোনো তথ্য দেননি।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আদালতের আদেশগুলো যাচাই করার মূল দায়িত্বটি ছিল তার (আমিনুল) দপ্তরের।বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে মিহির গুহ বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক।আমরা পুরো বিষয়টি উচ্চ আদালতকে জানিয়েছি।একই সঙ্গে ২১ কর্মচারীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।এখন পুরো বিষয়টি উচ্চ আদালতের এখতিয়ারে রয়েছে।আমাদের আইন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর উচ্চ আদালতে যোগাযোগ রাখছেন।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।