শনিবার ২রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

রেলওয়ের ডিজির অপসারণ প্রক্রিয়া সুবিধাভোগী কাউকে বসানোর সুক্ষ্ণ কৌশল

আপডেটঃ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ | আগস্ট ০২, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী:- উত্থাপিত একটি অডিট আপত্তিকে ‘দুর্নীতির অভিযোগ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে একতরফা ভাবে রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেনের অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে,জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়।যা প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচার ও অপারদর্শিতার প্রকাশ বলে মনে কোরছেন রেলভবনের কর্মকর্তারা ও বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির নেতৃবৃন্দরা।তারা বলছেন,অডিট আপত্তিকে ‘দুর্নীতির অভিযোগ’ হিসেবে উপস্থাপন একটি প্রশাসনিক কৌশল।এটি Malafide Intention বা পূর্বপরিকল্পিত উদ্দেশ্যে।সুবিধাভোগী কাউকে পদে বসানোর সুক্ষ্ণ কৌশল।রেলওয়ের উর্ধতন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলছেন, অডিট আপত্তি হচ্ছে হিসেবের গরমিল পরিলক্ষিত হওয়া।এটা দূর্নীতির আওতায় তখন পড়ে, যখন গরমিলের ব্যাখ্যা দিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ব্যার্থ হবেন।রেলের মেগা প্রকল্প গুলোর কাজের পরিধি ব্যপক হয়।এছাড়া প্রকল্প গুলোর কাজ খন্ড খন্ড ভাবে করা হয়।

এখানে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে হিসেবে ক্রটি হতে পারে।এটি সমাধান যোগ্য।রেলওয়ের একজন সর্বোচ্চ কর্মকর্তার কাজের অডিট আপত্তিকে ইস্যুকরে অপসারনের বিষয়টি অমানবিক ও দুঃজনক।বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান মনির বলেন,বর্তমান মহাপরিচালক একজন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা।

তিনি বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ও নিয়মিত কর্মকর্তা, যাঁর মেয়াদ ২০২৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত রয়েছে।তাঁর বিরুদ্ধে উত্থাপিত একটি অডিট আপত্তিকে ‘দুর্নীতির অভিযোগ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে একতরফাভাবে অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু করা, যা প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচার ও অপারদর্শিতার প্রকাশ।এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে তারা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবে এবং প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবেন।

ঢাকা রেলভবনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন,অডিট আপত্তি একটি প্রশাসনিক পর্যবেক্ষণ মাত্র, যা আপিলযোগ্য ও নিস্পত্তিযোগ্য।এটা কোন ফৌজদারি অপরাধ নয়।এ ছাড়া এখন পর্যন্ত দুদক কোনো মামলা করেনি এবং ডিজিকে অপসারণের জন্য আদালতের কোনো রায় নেই।তা সত্ত্বেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একতরফাভাবে পদত্যাগের চাপ সৃষ্টি করছে, যা উদ্বেগজনক ও বেআইনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিম রেলের একাধিক চীফ পর্যায়ের কর্মকর্তা, অডিট আপত্তি নিয়ে ডিজির অপসরনের বিষয়টিকে দুঃখ জনক ও রেলের আশ্বিন সংকেত বলে মনে করছেন।তারা বলছেন,কাজ করতে ভুলক্রটি হবে।এটা সংশোধনের জন্য অডিট বিভাগের সৃস্টি। কোন কাজের হিসেবের গরমিল দেখলে অডিট কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চিঠি বা কৈফিয়াত তলব কোরবেন।

তনি নিদৃস্ট সময়ে তার জবাব দিতে ব্যার্থ হলে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য আদালতে যাবেন।এখানে মহাপরিচালকের অডিট আপত্তিকে ইস্যুকরে তাকে তার আত্মপক্ষ সমর্থন বা আইনি কোন সুযোগ না দিয়ে অপসারন করা আইনগত বৈধ নয়।এটি হলে রেলের কোন উন্নয় কাজে যে কোন রেল কর্মকর্তা মনমানষিকতা কাজ কোরবেনা।

জানা গেছে,সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে অপসারণ করা বেআইনি।সংবিধানের ৩১, ৩২, ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নাগরিকদের আইনানুগ সুরক্ষা ও প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসনের অধিকার নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক।

এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে ILO Convention 158 ও UN Administrative Justice Guidelines-এও যুক্তিসংগত কারণ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে।অন্যদিকেকোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ ছাড়াই দুর্নীতির অভিযোগে পদচ্যুতি অসাংবিধানিক এবং প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচার।

সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান মনির হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, বর্তমান ডিজি-এর বিরুদ্ধে কোনো আদালতের রায়, দুদকের মামলা বা ফৌজদারি প্রমাণ ছাড়াই অপসারণের সিদ্ধান্ত শুধু বেআইনি নয়, বরং রেলওয়ের প্রতিষ্ঠাগত স্বার্থ ও পেশাদার কাঠামোর ওপর সরাসরি আঘাত।আমরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।