শনিবার ২রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

রাজশাহীর পদ্মার চরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে ডাকাতদের হানা, লুটে নিয়ে যাচ্ছে সবকিছু

আপডেটঃ ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ | জুলাই ২৮, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী:- রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলের মানুষ ডাকাত আতঙ্কে আতঙ্কিত।রাতের আঁধারে পদ্মাপার হয়ে এসে অতর্কিতভাবে রাতে হামলা চালিয়ে লুটে নিয়ে যাচ্ছে সবকিছু।গত ১৮ জুলাই গভির রাতে, কালিদাস খালী এলাকায় ঘুমন্ত গ্রামবাসির উপর হামলা চালাই ডাকাত দল।তারা সেই রাতে ৪ বাড়িতে ডাকাতি করে।লুট করে নিয়ে যায় নগদ অর্থ ও স্বর্নালংকার।এরপর থেকে ডাকাতের কবল থেকে নিজেদের জান ও মালের রক্ষার জন্য গ্রামবাসী রাত জেগে পালাক্রমে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন।এর পরও নদী পারের মানুষ গুলো নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান,১৮ জুলাই রাতে ২০ থেকে ২৫ জনের মুখোশ পরা অস্ত্রধারী ডাকাতদল প্রথমে গ্রামের লতিফ মোল্লার বাড়িতে ঢুকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা, আট আনি স্বর্ণের একটি আংটি, একটি জোড়া কানের দুল, ১০ আনি স্বর্ণের একটি চেইন এবং দুটি মোবাইল লুট করে নিয়ে যায়। এরপর তারা ইউনুস ব্যাপারীর বাড়ি থেকে নগদ ৮ হাজার টাকা, আট আনি স্বর্ণের একটি চেইন, রুপার নুপুর ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এর আগে ইদ্রিস ব্যাপারীর বাড়ি থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, একটি স্বর্ণের চেইন, দুটি রুপার বালা, একটি জোড়া নুপুর এবং তিনটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।সর্বশেষ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে হানা দিয়ে নগদ পাঁচ লাখ টাকা, দুই ভরির দুটি স্বর্ণের চেইন, চার আনি ওজনের দুটি স্বর্ণের আংটি, এক ভরির একটি কানের দুল ও একটি মোবাইল ফোন লুট করে নেয়।এরপর ডাকাতদল বাড়িগুলোর আসবাবপত্র তছনছ করে পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী লতিফ মোল্লা বলেন, ডাকাতরা ঈঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে এসেছিল।চারটি বাড়ি একে একে লুট করে প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে গেছে।চরের মানুষের একেকটা পরিবার একেকটা উঁচু ভিটায় বসবাস করে।এলাকায় কোন দুর্ঘটনা ঘটলে মসজিদের মাইকে মানুষ জড়ো করা হয় কিন্তু গভীর রাত হওয়ায় সেটি সম্ভব হয়নি।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আলম বলেন, গত এক মাসে অত্র এলাকায় প্রায় ১০টি চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে মানুষ চরম আতঙ্কে আছে। তিনি জানান, গত ১৫ জুলাই রাতে পদ্মার চরাঞ্চলের পলাশী ফতেপুর ও নতুন বাজারে একই রাতে পাঁচটি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মালামাল চুরি গেছে। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত জড়িতদের আটক করতে পারেনি। নিরুপায় হয়ে চরাঞ্চলের মানুষ এখন প্রতি রাতে একশ জনের একটি দল নদীর কূল এলাকা দিয়ে রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছে।

চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা নানা ভাবে অবগত হয়েছি-কুষ্টিয়ার দৌলতপুর,নাটোরের লালপুর ও রাজশাহীর বাঘা এই তিন থানা এলাকার একটি সংঘ্যবদ্ধ ডাকাত দল একত্রিত হয়ে তারা বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি সহ মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে।নিরুপাই হয়ে চরাঞ্চলের মানুষ সর্বসম্মতি ক্রমে গ্রাম পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। বর্তমানে ডাকাত আতঙ্কে গ্রামের মেয়েরা স্বর্ণের কোন জিনিষ কেউ ব্যবহার করছেনা।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ আ.ফ.ম আছাদুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি ডাকাতির খবর পেয়ে আমি ও সার্কেল এসপি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে চুরির ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।