বৃহস্পতিবার ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

পড়াশোনার পাশাপাশি সফল মৌচাষি রাকিব

আপডেটঃ ২:২৪ অপরাহ্ণ | আগস্ট ২৮, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

দিনাজপুর:- মাত্র ১০টি মৌবক্স নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন এক কলেজ পড়ুয়া।সেই যাত্রা এখন পরিণত হয়েছে এক সফল উদ্যোগে।দিনাজপুরের তরুণ উদ্যোক্তা রাকিব হাসান রিফাত, পড়াশোনার পাশাপাশি মৌচাষ করে তিনি শুধু নিজেই স্বাবলম্বী হননি, এলাকার আরও ২০-২৫ জন তরুণকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন।তার খামারের নাম দিয়েছেন তারুণ্য হানি ফার্ম।রাকিব জানান, ২০২১ সালে মাত্র ১০টি মৌবক্স দিয়ে তার মধু আহরণের কাজ শুরু হয়।শুরুর দিকে ১০ কেজি মধু বিক্রি করাই তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।কিন্তু এখন তার খামারে রয়েছে শতাধিক মৌবক্স।বর্তমানে তিনি শুধু দিনাজপুর নয়, দেশের বিভিন্ন জেলায় মৌবক্স নিয়ে গিয়ে মধু উৎপাদন করছেন।লিচু, তিল, কালোজিরা, সরিষা এবং ড্রাগন বাগানের পাশে মৌবক্স স্থাপন করে তিনি সারা বছরই মধু সংগ্রহ করেন।

এতে যেমন তার নিজের আত্মকর্মসংস্থান হয়েছে, তেমনি আরও কয়েকজন তরুণও এই কাজে যুক্ত হতে পেরেছেন।দিনাজপুর কেবিএম কলেজের ডিগ্রি (পাস) শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজে একজন যোগ্য মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।পরিবারের স্বপ্ন পূরণই আমার সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।

মৌচাষের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে রাকিব জানান, তিনি প্রায় এক বছর অন্যের খামারে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ শিখেছেন।সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এখন তিনি মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা আয় করছেন।রাকিবের প্রেরণায় তার বন্ধু ফিরোজ, মাসুদ, মাহফুজ ও মুন্নাও মৌচাষে যুক্ত হয়েছেন।

ফিরোজ বলেন, রাকিবের অনুপ্রেরণায় আমিও মধু চাষ শুরু করি এবং বর্তমানে প্রতি মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করছি।এটা আমার পরিবারের জন্য বড় সহায়তা।অন্য উদ্যোক্তা মাসুদ জানান, শুরুতে এই পেশা নিয়ে তার ভয় ছিল, তবে এখন বুঝতে পারছেন এটি বেশ লাভজনক।মাহফুজ ও মুন্না মধু বিক্রির পাশাপাশি মোমজাত পণ্যও তৈরি করছেন।

তারা মনে করেন, সামান্য উদ্যোগও যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়, তবে অনেক বেকার তরুণের কর্মসংস্থান সম্ভব।রাকিব এবং তার সহযোগীরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) থেকে মৌচাষের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।এখন তারা শুধু খামার পরিচালনা করছেন না, বরং নতুন উদ্যোক্তাদেরও প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

বিসিক দিনাজপুরের উপমহাব্যবস্থাপক জাহেদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মৌচাষ তরুণদের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত।মধু উৎপাদনের পাশাপাশি মোমজাত পণ্যের চাহিদাও ক্রমেই বাড়ছে।বিসিক সবসময় এ ধরনের উদ্যোক্তাদের পাশে থাকবে।স্থানীয়রা বলছেন, তরুণদের নেতৃত্বে গ্রামীণ অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে।মৌচাষ শুধু আয় নয়, কৃষির পরাগায়নের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনেও সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম : দিনাজপুর।