বৃহস্পতিবার ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

পাবজির নেশায় মা-ভাই-বোনকে হত্যার দায়ে কিশোরের ১০০ বছরের সাজা

আপডেটঃ ১২:০৮ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

পাকিস্তানের লাহোরে আলোচিত এক হত্যা মামলার রায় ঘোষণায় অনলাইন গেম পাবজির নেশায় মা, ভাই ও দুই বোনকে হত্যা করা এক কিশোরকে ১০০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।একইসঙ্গে ৪০ লাখ রুপি জরিমানারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।বুধবার লাহোরের অতিরিক্ত জেলা ও সেশন বিচারক রিয়াজ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।অভিযুক্ত আলি জাইনের বয়স ১৭ বছর হলেও ঘটনার সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৪।বিচারক তার অপরাধের ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের জন্য চারটি যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হচ্ছে, যা মিলিয়ে ১০০ বছরের সমান।তবে বয়সজনিত কারণে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তর করা হয়েছে।

মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছিল ২০২২ সালের জানুয়ারিতে লাহোরের কাহনা এলাকায়। ঘটনার রাত দুইটার দিকে আলি পরিবারের সদস্যদের ওপর গুলি চালায়। এতে তার মা নাহিদ মুবারক, যিনি স্থানীয় লেডি হেলথ ওয়ার্কার ছিলেন, বড় ভাই তাইমুর সুলতান, বোন মাহনূর ফাতিমা এবং ছোট বোন জান্নাত নিহত হন। তদন্তে উঠে আসে, আলি দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন গেম পাবজির প্রতি আসক্ত ছিল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা খেলেও সফলতা না পাওয়ায় মানসিকভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। সেই ক্ষোভ থেকে মায়ের লাইসেন্সকৃত পিস্তল নিয়ে ঘরে ঢুকে প্রথমে ঘুমন্ত অবস্থায় মাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর দুই বোনকে গুলি করে এবং শেষপর্যন্ত বড় ভাই আসলে তাকেও হত্যা করে। হত্যাকাণ্ড শেষে আলি কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয় এবং পরে পিস্তলটি পাশের নর্দমায় ফেলে দিয়ে এমন ভান করে যে সে ঘটনাকালে ঘুমিয়ে ছিল।

পুলিশ শুরু থেকেই আলির আচরণে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করে। কয়েকদিনের পর্যবেক্ষণ ও তদন্ত শেষে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে আলি নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেয়। মামলার শুনানিতে প্রসিকিউটর হাবিবুর রহমান আদালতে সাক্ষী ও প্রমাণ উপস্থাপন করেন, যা আলির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আদালত রায়ে স্পষ্ট করে জানায়, পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যার মতো অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তি দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তবে আসামির বয়স বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। এই রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানে আবারও আলোচনায় এসেছে অনলাইন গেম আসক্তি এবং এর ভয়াবহ প্রভাব।

IPCS News : Dhaka :