রবিবার ২২শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

পথচারীদের হাটার জন্য বরাদ্দ ফুটপাত ও সড়ক বাস-মোটরবাইক মেরামত ও ধুয়া মুছার দখলে

আপডেটঃ ১২:৫৯ অপরাহ্ণ | মে ১৯, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী:- রাজশাহী মহানগরীর ফুটপাত গুলোকে পথচারীদের আকর্ষণে রঙ্গিন রঙবেরঙের মনোমুগ্ধকর টাইলস দিয়ে নির্মান করেন রাজশাহী সিটিকর্পোরেশন।এতে করে শহরেরর সৈন্দর্য বর্ধনের পাশা পাশি পথচারিরা নিবিঘ্নে চলাফেরা করবেন।কিন্তু বাস্তবে তা উল্টো।রঙ্গিন টাইলসে নির্মিত  পথচারীর জন্য বরাদ্দ ফুটপাত ও সড়ক গুলে চলে গেছে গাড়ি-মোটরসাইকেল মেরামত ও ধুয়া মুছার দখলে।দেখা গেছে ফুটপাত গুলোতে চলছে মটার বাইক মেরাত, সার্ভেসিং ও ধুয়া মুছার কাজ।এছাড়া যন্ত্রাংশের পশরা ঝুলিয় বিক্রয়।

অন্যদিকে রাস্তায় বাস ও মটর বাইকের জন্য ভল্কানাইজিং, বাসের ফিল্টা পরিস্কার ও ধোয়া মোছার কজটিও চলে রাস্তা ঘিরে।দিনে-রাতে সবার চোখের সামনেই চলে এ দখলবাজি।সড়কের ওপর গাড়ি মেরামতের এসব ওয়ার্কশপ দেখে দেখে নগরবাসীর চোখ সয়ে গেছে।এসব ওয়ার্কশপের কারণে সড়কের প্রশস্ততা সংকুচিত হয়ে যানজট বাড়ছে।

ভুগতে হচ্ছে পথচারীদের।নগর পরিকল্পনাসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পথচারীবান্ধব ফুটপাত ও যানজট কমাতে সড়কের ওপরের এসব ওয়ার্কশপের কাজ বন্ধ করতে হবে।সিটি করপোরেশনের প্রশাসক জানিয়েছেন, সড়কে এ রকম ওয়ার্কশপ কিংবা গ্যারেজ পরিচালনার সুযোগ নেই।সে রকম করলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় ব্যস্ত সড়কের ওপর গাড়ি ও মটরবাইক মেরামত করা হয়।সড়কের পাশে ছোট ছোট দোকানে বিক্রির জন্য থাকে যন্ত্রাংশ।কিন্তু মেরামত কিংবা সেই যন্ত্রাংশ লাগানোর কাজ সব হয় সড়কের ওপরই।নগরীর ব্যাস্ততম গ্রেটাররোড অন্যতম ব্যস্ত সড়ক।

সড়কটির পূর্বে শুভপ্ট্রল পাম্প থেকে বাইপাস মোড় পর্যন সবসময় যানজট লেগে এমন যানজট প্রবণ সড়কের ওপর গাড়ি মেরামতের কাজ চলে প্রশাষনের সামনেই।এছাড়া গ্যারেজগুলো শুধু রাস্তা নয়, পথচারী চলাচলের ফুটপাতও দখল করে রাখে।ফলে এসব ব্যস্ত সড়কে কিংবা ফুটপাতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের।

অন্যদিকে রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেলের মতো ছোট যানবাহনের চাপ রয়েছে সড়কে।ফলে ভোগান্তি নিত্যসঙ্গী এসব এলাকায় চলাচলকারীদের।নগরবাসীর অভিযোগ, প্রশাসন ও পুলিশের চোখের সামনেই দিনের পর দিন এসব কাজ চলছে।কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না।সেজন্য গ্যারেজ মালিকদের কাছে বিষয়টি স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আলম নামের এক পথচারী বলেন, বছরের পর বছর অনেক মোটর ওয়ার্কশপের কাজ এভাবে সড়কের ওপর চলছে।দায়িত্বশীলরা কেউ কোনো ব্যবস্থা নেন না।গ্যারেজের মালিকরাও এটিকে স্বাভাবিক ধরে নিয়েছেন।ফলে সড়কের প্রশস্ততা কমে গেছে, যার প্রভাবে যানজট প্রকট হচ্ছে।রেজাউল হক নামের আরেক পথচারী বলেন, গাড়ির গ্যারেজের কারণে অনেক জায়গায় ফুটপাত দখল হয়ে আছে।

জানা গেছে, পথচারীদের নির্বিঘ্ন চলাচলের জন্য পথচারী নিরাপত্তা খসড়া প্রবিধানমালা, প্রকাশ করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন।তবে সেই খসড়া প্রস্তাব এখনো চূড়ান্ত হয়নি।খসড়া প্রবিধানমালায় ফুটপাত নির্মাণের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।খসড়া প্রবিধানমালায় বলা আছে, ফুটপাত ও সংলগ্ন কোনো স্থানে কোনোভাবেই নির্মাণ সামগ্রী, মালপত্র, আবর্জনাসহ কোনো কিছুই রাখা যাবে না।

ব্যবহারবিধির ভিত্তিতে ফুটপাতকে ভবন সম্মুখ জোন বা বিল্ডিং ফ্রন্টেজ জোন, পথচারী জোন ও রোড ফার্নিচার জোন-তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে।কিন্তু লোকবল সল্পতায় তা কর্যকরতে পারছেনা রাসিক।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর তদারকির অভাবে সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।ফলে যানজট ও পথচারীদের দুর্ভোগও কমছে না।

এছাড়া আমাদের দেশের কোনো কিছুই বিজ্ঞানভিত্তিক নয়।সড়কের ওপর গাড়ি মেরামতের কোনো সুযোগ নেই।গাড়ি মেরামত হবে রেজিস্টার্ড ওয়ার্কশপে।রেজিস্টার্ড ওয়ার্কশপের বাইরে কাজ করলে শুধু জনভোগান্তিই হচ্ছে তেমন নয়, এর ফলে গাড়ির ফিটনেস ঠিক আছে কিনা সেটি অপরীক্ষিত থেকে যায়।

দেখা গেল, কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েছে, কিন্তু তার ফিটনেস টেস্ট না করেই সড়কের সেসব গ্যারেজে মেরামত করে আবার সড়কে চলছে।এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বাড়ছে।বিআরটিএর এসব দেখভালের কথা থাকলেও তারা পেশাদার আচরণ করতে পারছে না।যারা গাড়ির নিবন্ধন দেবে তাদের হাতে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিতে হবে।

কিন্তু আমাদের দেশে এমনটি নেই।ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত কোম্পানিগুলো রেজিস্টার্ড গ্যারেজে গিয়ে সময় নষ্ট করতে চায় না।তারা হাতের কাছে সড়কের গ্যারেজেই কাজ করিয়ে নিচ্ছে।ফলে এমন অবৈধ গ্যারেজ আড়ছে।আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নের চেয়ে নীতিগত উন্নয়ন ও এর বাস্তবায়ন বেশি জরুরি, যা দায়িত্বশীলরা এখনো উপলব্ধি করছেন না।এটি দুঃখজনক।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।