দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে চাঁপাই-রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে আসছে আগ্নেয়াস্ত্র
আপডেটঃ ১:৪৩ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ২৫, ২০২৩

নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:- আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র প্রবেশ করছে দেশে।এসব অস্ত্র নির্বাচনী ও নির্বাচন উত্তোর সহিংসতার লক্ষ্যেই অবৈধ দেশি-বিদেশি অস্ত্র মজুদ করছে।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যানুযায়ী, সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়াস্ত্র আসে চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যানুযায়ী রাজশাহী অঞ্চলে অবৈধ অস্ত্র কারবারিদের ২২টি চক্র রয়েছে।
তবে, বিজিবির বক্তব্য হলো, অস্ত্রসহ যে কোনো অবৈধ পণ্য যেন দেশের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়ে তারা সবসময় সতর্ক রয়েছেন।র্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিয়াজ শাহরিয়ার বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার লক্ষ্যে অবৈধ দেশি-বিদেশি অস্ত্র মজুদ করা হচ্ছে।সীমান্তজুড়ে অস্ত্র কারবারিদের ২২টি চক্র সক্রিয় রয়েছে।
প্রতিটি চক্রে ৫ থেকে ১০ জন করে সদস্য রয়েছেন।তথ্যানুযায়ী দেশে তৈরি ওয়ান শুটারগান বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা, আর বিদেশি পিস্তল বিক্রি হচ্ছে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায়।তবে এসব সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য ধরাও পড়েছে।তাদের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী ও বিশাল হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎতপরতায় তারা এখন অনেকটায় নিস্কৃয়।
এছাড়া অবরোধ ও হরতালের কারণে সম্প্রতি তারা খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না।কারণ দূর পাল্লার যানবাহন এখন কম চলাচল করছে।তবে অবৈধ অস্ত্র কারবারিদের বিষয়ে র্যাব সর্বদা সজাগ আছে।সূত্রমতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে বিভিন্ন সবজি ও ফলের ট্রাক,যাত্রীবাহী বাসের সিটের নীচে, গাড়ীর টাইয়ারে, রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পাচার করা হয় অস্ত্র।
মাঝেমধ্যে অস্ত্রসহ অনেকেই আটক হচ্ছে।এদের বেশির ভাগই বাহক কিশোর ও যুবক।অস্ত্র ব্যবসায়ীরা উঠতি বয়সীদের আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি পরিবহনের কাজে ব্যবহার করছে তাদের।অল্প সময়ে অস্ত্র পরিবহনের কাজে ভাড়ায় খেটে তারা মোটা অংকের অর্থ পায়।এ কারণে সীমান্তবর্তী এলাকার দরিদ্র কিশোর ও যুবকরা এ অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
বিজিবি সদর দপ্তরের হিসাবে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫৯৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।এর মধ্যে ৩৪টি পিস্তল ও ১টি রিভলবার।রাইফেল, বন্দুকসহ অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৪৮টি।গত ৭ অক্টোবর সীমান্ত পার হয়ে রাজশাহীতে আসা বিদেশি অস্ত্রের একটি চালান আটক করে র্যাব।
এই চালানের সঙ্গে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।ওই চালানটিতে চারটি বিদেশি রিভলবার, তিনটি বিদেশি পিস্তল, চারটি ম্যাগাজিন, আট রাউন্ড গুলি, আটটি গুলির খোসা ও বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি ছিল।পরে গ্রেপ্তার হওয়া ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পারে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালে ব্যবহারের জন্যই এই অবৈধ অস্ত্রের চালান আনা হয় প্রতিবেশী দেশ থেকে।
হাতবদল হয়ে এই চালানটি চড়া দামে বিক্রি করার কথা ছিল।৯ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে পৃথক আরেকটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের চালান ধরে বিজিবি।দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দখল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি ম্যাগাজিন জব্দ করা হয়।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অতীতের তুলনায় অবৈধ অস্ত্র আসা বেড়েছে।
নওগাঁর নজিপুর, সাপাহার, বদলগাছী, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি, দিনাজপুরের হিলিসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র আসছে।সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ঢুকছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তপথে।এ ক্ষেত্রে শিবগঞ্জের শাহবাজপুর, কিরণগঞ্জ, তারাপুর, চৌকা ও বিনোদপুর-খাসেরহাট ও পাকা এলাকা ব্যবহার করছেন কারবারিরা।অস্ত্র আসছে সোনামসজিদ সীমান্ত দিয়েও।
বিজিবির রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে রউফ বলেছেন, অস্ত্রসহ যে কোনো অবৈধ জিনিস যাতে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়ে সব সময় সতর্ক ও সাবধান আছি আমরা।নির্বাচন বলে কথা নয়, সীমান্তে বিজিবির অবস্থান সব সময়ই কঠোর।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।