জেন-জির আন্দোলনে টালমাটাল নেপাল
আপডেটঃ ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুসহ ললিতপুর ও ভক্তপুর জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের পর তরুণ প্রজন্মের সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) এ কারফিউ জারি করা হয়।কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন অফিস রিং রোডের ভেতরের সব এলাকায় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কারফিউ ঘোষণা করেছে। এর আওতায় বল্কুমারী ব্রিজ, কোটেশ্বর, সিনামঙ্গল, গাউশালা, চাবাহিল, নারায়ণ গোপাল চৌক, গঙাবু, বলাজু, স্বয়ম্ভূ, কালাঙ্কি, বলখু ও বাগমতী ব্রিজসহ পুরো রিং রোড এলাকায় সব ধরনের চলাচল ও জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ললিতপুর জেলা প্রশাসনও সকাল ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করেছে। এটি ললিতপুর মহানগরীর ২, ৪, ৯, ১৮ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভৈসেপাটি, সানেপা ও চ্যাসাল এলাকায় কার্যকর থাকবে। ভক্তপুর জেলা প্রশাসনও একই সময়ে মাধ্যপুর ঠিমি, সূর্যবিনায়ক, চাঙ্গুনারায়ণ ও ভক্তপুর পৌরসভার এলাকায় কারফিউ জারি করেছে।আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন আইন, ১৯৭১-এর ধারা ৬(৩) অনুযায়ী এই কারফিউ কার্যকর হবে।এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকা এই প্রজন্ম রবিবার থেকে বিক্ষোভ শুরু করে, যা সোমবার রীতিমতো উত্তাল আকার ধারণ করে।
রাজধানীর বাণেশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত ২০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। সহিংসতার মধ্যে পদত্যাগ করেছেন নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগের দাবিও উঠেছে।অন্যদিকে, সোমবার রাতেই বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে সরকার ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং জানান, সরকারের এই সিদ্ধান্ত জেন জি প্রজন্মের দাবি মেনেই নেওয়া হয়েছে। তবে সোমবারের সহিংসতা তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে।
উল্লেখ্য, নেপালের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে সরকারিভাবে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। সেই নির্দেশ অনুযায়ী ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল সরকার। তবে নির্ধারিত সময়ে নিবন্ধন না করায় গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে এসব প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়, যা ব্যাপক আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায়।
IPCS News : Dhaka :