বৃহস্পতিবার ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

চুয়াডাঙ্গায় বিষাক্ত মদপানে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও একজন

আপডেটঃ ১২:২৩ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ১৩, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর অসুস্থ আরও একজন বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহতদের সবাই নিম্নআয়ের পেশার মানুষ কেউ ভ্যানচালক, কেউ মিল শ্রমিক, আবার কেউ মাছ ব্যবসায়ী।নিহতরা হলেন নফরকান্দি গ্রামের ভ্যানচালক খেদের আলী (৪০), খেজুরা হাসপাতালপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম (৪০), পিরোজখালী স্কুলপাড়ার ভ্যানচালক মোহাম্মদ লান্টু ওরফে রিপু (৩০), শংকরচন্দ্র গ্রামের শ্রমিক মোহাম্মদ শহীদ (৪৫), ডিঙ্গেদহ টাওয়ারপাড়ার মিল শ্রমিক মোহাম্মদ সামির (৫৫) এবং এশিয়া বিস্কুট ফ্যাক্টরি পাড়ার শ্রমিক সরদার মোহাম্মদ লান্টু (৫২)। এছাড়া দিনমজুর আলিম উদ্দিন (৩৮) গুরুতর অবস্থায় সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জামাল আল নাসের আলী জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন একসঙ্গে অ্যালকোহল পান করেন। এরপর সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং গত তিন দিনে ছয়জনের মৃত্যু হয়। রোববার (১২ অক্টোবর) রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।তিনি আরও বলেন, নিহতদের পরিবারের সদস্যরা শুরুতে বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেছিলেন। ইতোমধ্যে চারজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে ডিঙ্গেদহ বাজারে মদপানের পর শনিবার (১১ অক্টোবর) প্রথমে খেদের আলী ও সেলিম মারা যান। পরদিন রোববার (১২ অক্টোবর) আরও চারজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা গোপনে দাফন সম্পন্ন করলেও পরে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ডিঙ্গেদহ বাজারে গোপনে দেশি মদ বিক্রি হয়ে আসছে। প্রশাসনের উদাসীনতা এবং নজরদারির অভাবেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের দাবি।চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলিম উদ্দিন বলেন,“আমরা ভুট্টার গাড়ির লোডের কাজ করি। আমাদের সর্দার স্পিরিট পান করান। আমি অল্প পরিমাণে খেয়েছিলাম। কয়েকদিন পর থেকেই সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ি।”চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আফরিনা ইসলাম জানান, রোববার বিকালে লান্টু মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে গুরুতর অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি দুদিন আগে অ্যালকোহল পান করেছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ওয়ার্ডে পাঠানো হলেও সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মৃত্যুর কারণ ও অ্যালকোহলের উৎস অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।পুলিশ জানায়, মৃতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং বিষাক্ত মদের উৎস চিহ্নিত করতে অভিযান শুরু করেছে।

স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় অবৈধ মদ বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে।

IPCS News : Dhaka :