শনিবার ২রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

চুক্তি না হলে ভারতের রপ্তানিতে ২৫% শুল্ক: ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

আপডেটঃ ১২:২০ অপরাহ্ণ | জুলাই ৩০, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যেখানে তিনি বলেছেন যে যদি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নির্ধারিত বাণিজ্যচুক্তি না হয়, তাহলে ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে।এই ঘোষণা শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নয়, বরং ভারতের রপ্তানি নির্ভর অনেক শিল্প খাতের জন্যও বড় ধরনের ধাক্কা হয়ে উঠতে পারে।ট্রাম্প তার বক্তব্যে বলেন, “ভারত আমাদের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক বসায়।তারা আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করে কিন্তু সমান সুবিধা দেয় না।এটা চলতে পারে না।আমাদের ন্যায্য চুক্তি চাই।যদি সেটা না পাই,আমরা আমাদের পদ্ধতিতে কাজ করব, শুল্ক আরোপ করব।”

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে।যুক্তরাষ্ট্র বহু বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে যে ভারত একতরফাভাবে সুবিধা নিচ্ছে। ভারতীয় অনেক পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্ক অপেক্ষাকৃত কম, অথচ ভারত নিজে উচ্চ শুল্ক আরোপ করে।ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই পরিস্থিতি বদলানো প্রয়োজন এবং ভারতকে সমতা ভিত্তিক চুক্তিতে আসতে হবে।গত কয়েক মাসে দুই দেশের মধ্যে পাঁচবার বাণিজ্য আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো থেকে এখনো কার্যকর কোনো সমঝোতা হয়নি।ট্রাম্প প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা আর ধৈর্য ধরবে না।ট্রাম্পের ভাষায়, “ভারত আমাদের বন্ধু, কিন্তু বন্ধুত্ব মানে এই নয় যে তারা আমাদের ঠকাবে।”এদিকে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে তারা আলোচনার মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি করতে চায়।তবে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সময় লাগছে কারণ দুই দেশের বাণিজ্য কাঠামো ভিন্ন, এবং বিভিন্ন শিল্পখাতের স্বার্থ জড়িত।ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, তারা আগস্ট মাসের মধ্যে একটি অন্তর্বর্তী সমঝোতায় পৌঁছাতে চায় যাতে শুল্ক আরোপ এড়ানো যায়।

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরে ভারতীয় অর্থনৈতিক বাজারে তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।রুপির মান ডলারের তুলনায় নিচে নেমে গেছে। বিনিয়োগকারীরা শঙ্কায় পড়েছেন, কারণ উচ্চ শুল্ক আরোপ হলে ভারতের রপ্তানি খাতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।বিশেষ করে অটোমোবাইল, ফার্মাসিউটিক্যাল, গার্মেন্টস, ও প্রযুক্তি খাত সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।এসব খাত মার্কিন বাজারে ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্ক আরোপ শুধু অর্থনীতির ওপর নয়, বরং রাজনৈতিক সম্পর্কের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।ভারত দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বাড়াতে কাজ করছে।তবে ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রাসী বাণিজ্যনীতি সেই সম্পর্ককে চাপের মধ্যে ফেলছে।

বিশ্ববাজারও এই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।যদি ট্রাম্প সত্যি এই শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে শুধু ভারত নয়, বরং অন্যান্য দেশ যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনুরূপ অবস্থানে আছে, তারাও নতুন চাপে পড়বে।এটা বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।বর্তমানে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরে ভারতের সামনে দুটি পথ এক, দ্রুত সমঝোতায় আসা; দুই, শুল্কের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া।তবে দ্বিতীয় পথটি সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে যা উভয় দেশের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে।এখন দেখার বিষয়, ভারত কত দ্রুত এবং কিভাবে এই হুমকির মোকাবিলা করে।

IPCS News : Dhaka :