ক্রমান্বয়ে তলানিতে নামছে আখচাষ
আপডেটঃ ১২:৪৪ অপরাহ্ণ | মার্চ ২৪, ২০২২
নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী:-চিনিকল চলবে, না বন্ধ হয়ে যাবে এ নিয়ে চাষিদের অনিশ্চয়তায় রাজশাহীতে তলানিতে নেমেছে আখচাষ।আখের অভাৱে ২০২১-২২ মাড়াই মৌসুমে রাজশাহী চিনিকল চলেছে মাত্র ১৯ দিন।চিনিকলের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে কম সময়ের আখ মাড়াই মৌসুম।চিনিকল কর্তৃপক্ষ এ বছর চাষ বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করলেও খুব একটা লাভ হয়নি।পবা উপজেলার হরিয়ানে রাজশাহী চিনিকল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬২ সালে।১৯৬৫-৬৬ সাল থেকে এখানে চিনি উৎপাদন শুরু হয়।রাজশাহীতে আগে আখচাষির সংখ্যাও ছিল প্রচুর।চিনিকলে আখ দিয়ে সময়মত টাকা না পাওয়াসহ নানা কারণে দিনে দিনে আখ চাষ ও চাষির সংখ্যা ক্রমাগত কমছেই।এরই মধ্যে রাজশাহীসহ দেশের ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ব চিনিকল বেসরকারি মালিকানায় হস্তান্তরের ব্যাপারে ২০২০ সালের দিকে কথা বার্তা শুরু হয়।রাজশাহীর চাষি ও-চিনিকলের কর্মচারীরা এর বিরোধিতা করেন।
ফলে চিনিকলটি এখনও রাষ্ট্রীয় মালিকানাতেই চলছে।তবে চিনিকল চলবে কি চলবে না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে রাজশাহীতে আখচাষ কমে গেছে।২০২১-২২ মাড়াই মৌসুমে গতবছরের ৩ ডিসেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৯ দিন চলেছে চিনিকলটি।চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, এই ১৯ দিনে মাত্র ৩ হাজার ৩০০ একর জমি থেকে ২৪ হাজার ৩ মেট্রিক টন আখ পায় চিনিকল।
এই মৌসুমে ৩ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও উৎপাদন হয় মাত্র ১৩১৮ মেট্রিকটন চিনি।প্রতি কেজি ৭৪ টাকা দরে এসব চিনি বিক্রি করা হচ্ছে।সর্বশেষ মৌসুমে চাষিদের টন প্রতি আখের মূল্য দেয়া হয়েছে সাড়ে তিন হাজার টাকা।এবার আখচাষ বাড়াতে চাষিদের সময়মত টাকা পরিশোধ করা হয়।চাষিদের দেয়া হয়েছে সার ও কীটনাশক।
তাও চাষ খুব একটা বাড়েনি।এ বছর ৭ হাজার একর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১০৫ একর জমিতে।অথচ ২০২০-২১ মৌসুমেই ১০ হাজার ১০০ একর জমিতে আখচাষ হয়।তার আগে ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত-চিনিকল চালু ছিল।ওই সময় আখ পাওয়া যায় ১ লাখ ২৯ হাজার টন।চিনি উৎপাদন হয় ৮ হাজার ১৯ টন।
সব শেষ মৌসুমেই চিনির উৎপাদন সর্বনিম্ন।রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর এলাকার আখচাষি আহাদ আলী-বলেন, ১৫ বছর আগে তিনি ১০ বিঘা জমিতে আখ চাষ করতেন।কিন্তু চিনিকল থেকে সময়মত টাকা না পাওয়ার কারণে চাষ কমাতে শুরু করেন।চিনিকল বন্ধ করে দেয়ার ব্যাপারে কথাবার্তা শুরু হলে তিনি একেবারে চাষ কমিয়ে এক বিঘা জমিতে নামান।
ওই আৰ চিনিকলে দিতে পেরেছেন।তাই এবার চাষ করেছেন দুই বিঘা জমি।রাজশাহী-চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাজাহান কবীর বলেন, এক সময় চাষির সংখ্যা ছিল ৫০ হাজার।এখন পাঁচ হাজারও নেই।চাষিরা আখচাষ বাদ দিয়ে অন্য ফসল চাষাবাদ করছেন।এক সময় টানা পাঁচমাস পর্যন্ত চিনিকল “চলেছে।
কিন্তু এখন চাষির সংখ্যা কমে যাওয়ায় মাড়াই মৌসুমও ছোট হয়ে এসেছে।তারপরও ৫০ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত চিনিকল চলত।কিন্তু সর্বশেষ মৌসুমে চিনিকল চলবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় আখচাষ একেবারেই কমে গেছে।
আখের অভাবে এই মৌসুমে মাত্র ১৯ দিন চিনিকল চলেছে।তিনি বলেন, যেহেতু রাজশাহী চিনিকল চলছে, তাই আমরা চাষ বাড়ানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছি।
চাষিদের সময়মত আখের টাকা দিয়েছি।সার, বীজ, কীটনাশক দিয়েছি।এতে কিছু জমি বেড়েছে।আশা করছি আগামীতে আরো কিছু বাড়বে।
IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।