রবিবার ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

উপখাদ্য পরিদর্শক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি: দিনাজপুর থেকে যোগাযোগ ডিভাইসসহ পরীক্ষার্থী আটক

আপডেটঃ ২:৫৯ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ২৬, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

দিনাজপুর:- খাদ্য অধিদপ্তরের ‘উপখাদ্য পরিদর্শক’ পদের লিখিত পরীক্ষায় ভয়াবহ জালিয়াতির অভিযোগে দিনাজপুর থেকে কৃষ্ণকান্ত রায় (স্নাতক) নামে এক পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর পরপরই শহরের কসবা এলাকার কেরী মেমোরিয়াল হাইস্কুল কেন্দ্র থেকে তাকে হাতেনাতে ধরা হয়।আটক পরীক্ষার্থী কৃষ্ণকান্ত রায়, বিরল উপজেলার বাসিন্দা হলেও দিনাজপুরের ফকিরপাড়ায় একটি ছাত্রাবাসে থাকতেন।কেন্দ্র সূত্র জানায়, পরীক্ষার হলে তিনি বারবার অস্বাভাবিকভাবে কাশছিলেন।বিষয়টি কর্তব্যরত শিক্ষকদের কাছে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে জেরা ও তল্লাশি করা হয়।

তল্লাশির পর তার কাছ থেকে বিশেষ যোগাযোগ ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।জিজ্ঞাসাবাদে কৃষ্ণকান্ত রায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন এবং জানান, এই প্রশ্ন ফাঁস চক্রটির মূল ঘাঁটি ঢাকায়।তাদের নির্দেশেই তিনি ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসেন।চক্রটি তাকে জানিয়েছিল, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সেট যদি ‘পদ্মা’ হয়, তবে যেন তিনি কাশির মাধ্যমে সংকেত দেন।

কিন্তু বিষয়টি বুঝে উঠতে না পেরে তিনি বারবার কাশতে থাকেন, আর তাতেই তিনি ধরা পড়েন।ওই পরীক্ষার্থী জালিয়াতির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বর্ণনা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন।তিনি জানান, পরীক্ষা শুরুর ১ থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চক্রটির হাতে চলে আসে।এরপর শহরের ফকিরপাড়া ও সুইহারি এলাকার দুটি ছাত্রাবাসে কোচিং সেন্টারের কিছু শিক্ষক দ্রুত বিভিন্ন সেটের উত্তরপত্র তৈরি করেন।

এরপর ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশ্নের সেট নম্বর জেনে নেওয়া হয়।এরপরেই শুরু হতো আসল খেলা ! ডিভাইসের অন্য প্রান্ত থেকে প্রশ্নের ক্রম অনুযায়ী দ্রুত উত্তর গুলো (ক, খ, গ, ঘ) বলা হতো।পরীক্ষার্থী শুনে শুনে তৎক্ষণাৎ প্রশ্নপত্রে দাগ দিয়ে চিহ্নিত করতেন এবং পরে ওএমআর শিট পূরণ করতেন।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন জানান, আগে থেকেই তাদের কাছে তথ্য ছিল যে, ওই কেন্দ্রে এক পরীক্ষার্থী ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন।বিশেষ নজরদারির পরে ১০১ নম্বর রুমের ওই পরীক্ষার্থীর আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে তল্লাশি করে ডিভাই সগুলো উদ্ধার করা হয়।সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলো, প্রশাসনের কাছে খবর রয়েছে যে এদিন দিনাজপুরের বিভিন্ন কেন্দ্রে কমপক্ষে ৫৫ জন পরীক্ষার্থী এই ধরনের ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষায় বসেছিলেন।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম হাবিবুল হাসান বলেন, জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত এক পরীক্ষার্থীকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে।এই চক্রের আরও তথ্য উদঘাটনে আটক পরীক্ষার্থীর ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে এবং পুরো চক্রটিকে ধরতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জোরদার অভিযান চলছে।

IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম, দিনাজপুর।