বৃহস্পতিবার ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

আলুর খেতে পেঁপে চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয়, যুবকদেরও পথ দেখাচ্ছেন বীরগঞ্জের কৃষক মুসা মিয়া

আপডেটঃ ১২:১৫ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ১২, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

দিনাজপুর:- প্রচলিত ধারণা ভেঙে, গতানুগতিক আলু চাষ ছেড়ে পেঁপে চাষ করে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পাল্টাপুর ইউপির বাছাড় গ্রামের কৃষক মুসা মিয়া।কৃষি অফিসের সঠিক পরামর্শ, সুপরিকল্পিত উদ্যোগ এবং অদম্য পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি মাত্র ৫ মাসে তার প্রাথমিক বিনিয়োগের টাকা তুলে এনেছেন।তার এই সাফল্য এখন কেবল একটি বাগান নয়, এটি এলাকার বেকার যুবক ও অন্য কৃষকদের জন্য আশার আলো হয়ে উঠেছে।কৃষক মুসা মিয়া জানান, আগে তিনি আলু চাষ করতেন, কিন্তু খরচের তুলনায় লাভ ছিল অনেক কম।কৃষি অফিসের দিকনির্দেশনা মেনে তিনি তার ৩ বিঘা জমিতে আলুর বদলে উচ্চ ফলনশীল ও আকর্ষণীয় বাবু ও সুখী জাতের ৩ হাজার হাইব্রিড পেঁপের চারা রোপণ করেন।এতে তার মোট খরচ হয় প্রায় ২ লাখ টাকা।

তবে চমক এখানেই ! মাত্র ৫ মাসের মাথায় তিনি প্রায় ২ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করে তার পুরো বিনিয়োগ তুলে নেন।তিনি আরও জানান, বর্তমানে গাছে প্রচুর ফল আছে।এক মাস পর পর বিক্রি করছি।প্রতিবার সব খরচ বাদে ১ লাখ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে।মুসা মিয়ার বাগান এখন এলাকা জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।প্রতিটি গাছে ঝুলে আছে ৩০ থেকে ৫০টি পেঁপে।

চারা লাগানোর মাত্র ৩ থেকে ৪ মাসের মাথায় ফল আসা শুরু করে।প্রতিটি পেঁপের ওজন হয় ১ থেকে দেড় কেজি।এই পেঁপে গুলোর বিশেষত্ব হলো : বাবু ও সুখী জাতের এই পেঁপে ৫-৬ মাসের মধ্যে ফল দেওয়া শুরু করে।একটানা দুই বছর ফলন পাওয়া যায়।পাকা পেঁপে সহজে নষ্ট হয় না, তাই দূর-দূরান্তে বাজারজাত করা সহজ।এগুলো ভাইরাস রোগ সহনশীল।

মুসা মিয়া আশা করছেন, এভাবে ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি ফলন পাবেন এবং বিক্রি করবেন।হিসাব অনুযায়ী, এই ২ বছরে তার আয় লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।মুসা মিয়ার ভাতিজা আশরাফুল ইসলাম এবং তার বন্ধু বিপ্লব এই বাগানে বিনিয়োগ করেছেন।এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রমাণ করেছে যে সঠিক পরিকল্পনা ও উন্নত জাতের বীজ ব্যবহার করে অল্প খরচেও অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান, মুসা মিয়ার মতো কৃষকরাই আমাদের প্রেরণা।হাইব্রিড বাবু চাষ করে কৃষক অল্প সময়ে লাভবান হচ্ছেন, যার বাস্তব প্রমাণ তিনি।কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পেঁপে চাষিদের সবরকম সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।মুসা মিয়ার এই অভাবনীয় সাফল্য দেখে গ্রামের বেকার যুবকসহ অনেকেই এখন পেঁপে চাষের দিকে ঝুঁকছেন।

বাগান দেখতে আসা ফরহাদ হোসেনের মতো অনেকেই বলছেন, এত অল্প জায়গায় এত সুন্দর ফলন সম্ভব, ভাবতেই পারিনি।আমিও এই বাবু ও সুখী জাতের পেঁপে চাষের কথা ভাবছি।কৃষকদের দৃঢ় বিশ্বাস, সরকারের কৃষি অধিদপ্তর যদি আরও বেশি সহযোগিতা করে, তবে দিনাজপুরে পেঁপে চাষে এক নতুন বিপ্লব বয়ে আনা সম্ভব।মুসা মিয়ার এই সাফল্যই তার প্রমাণ, গ্রামের মাটিতে পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই।

IPCS News : Dhaka : আব্দুস সালাম : দিনাজপুর।