শনিবার ২রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারি বর্ষণ, যেসব অঞ্চলে পানি জমার আশঙ্কা

আপডেটঃ ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ | জুলাই ৩১, ২০২৫

নিউজ ডেস্কঃ

সারা দেশের আকাশে আবারও মেঘ জমেছে।দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইতোমধ্যে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি শুরু হয়েছে, আর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের আটটি বিভাগের বেশ কিছু জায়গায় ভারি বর্ষণ হতে পারে।এই বৃষ্টিপাতের কারণে কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা, নদী ও পাহাড়ি এলাকায় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে।এটি ধীরে ধীরে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রবেশ করছে।এর প্রভাবে দেশে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব বাড়ছে, ফলে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।বিশেষ করে সিলেট, চট্টগ্রাম এবং বরিশাল বিভাগের অনেক জেলায় ভারি বর্ষণ হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।এসব অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বা তারও বেশি বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।এর বাইরে ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগেও মাঝারি থেকে ভারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা রয়েছে।বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক দফা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, ঢাকায় দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে, যা নাগরিক জীবনে স্বস্তি দিলেও সড়কে জলাবদ্ধতা ও যানজট তৈরি করতে পারে।সিলেট অঞ্চলে ইতোমধ্যেই কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাঙামাটি এবং কক্সবাজারের মতো পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের ঝুঁকি থাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স এবং স্থানীয় প্রশাসন সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

বরিশাল ও খুলনায় ভারি বর্ষণের ফলে কিছু নিচু এলাকায় পানি জমে গেছে। এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা জানিয়েছে, অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই সড়কে হাঁটুপানি জমেছে।স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ ড্রেন পরিষ্কার ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে কাজ শুরু করেছে।এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বৃষ্টিপাতের ফলে আউশ ও আমনের জমিতে পানি ধরে রাখার সুযোগ তৈরি হবে, যা কৃষির জন্য ইতিবাচক।তবে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে বীজতলা এবং রোপণের ক্ষতি হতে পারে।কৃষকদের প্রতি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যেন তারা মাঠের অবস্থার ওপর নজর রাখেন এবং স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।

মৎস্য অধিদপ্তর থেকে উপকূলীয় জেলেদের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।আগামী কয়েকদিন সাগর উত্তাল থাকতে পারে বলে তাদের গভীর সমুদ্রে না যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নদ-নদীতে পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৃষ্টিপাত মৌসুমি বায়ুর স্বাভাবিক প্রভাবে হচ্ছে।তবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি যদি আরও ঘনীভূত হয়, তাহলে সেটি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে, যার ফলে সারা দেশে বৃষ্টিপাত আরও তীব্র হতে পারে।পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।তবে সপ্তাহ শেষে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।বিশেষ করে স্কুলগামী শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থদের বাইরে চলাফেরা সীমিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।বৃষ্টির মধ্যে ছাতা, রেইনকোট এবং উপযুক্ত নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার করার অনুরোধ করা হয়েছে।এই বৃষ্টিপাত দেশের আবহাওয়া ও কৃষির জন্য স্বস্তির বার্তা বয়ে আনলেও, অতিরিক্ত বর্ষণের কারণে যেকোনো ধরনের দুর্যোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।ফলে, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ দুই পক্ষকেই সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে, যাতে কোনো বিপর্যয় হলে তা দ্রুত মোকাবিলা করা যায়।

আবহাওয়া অফিস পরবর্তী তথ্য নিয়মিতভাবে জানাবে বলে জানিয়েছে।সাধারণ মানুষকে সরকারি উৎস থেকে তথ্য গ্রহণ করতে এবং বিভ্রান্তিকর গুজব এড়িয়ে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।

IPCS News : Dhaka :