শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

অবহেলিত পশ্চিমাঞ্চলে রেলপথে উন্নয়নের ছোঁয়া

আপডেটঃ ১২:২৬ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ১০, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ

অবহেলিত পশ্চিমাঞ্চলে রেলপথ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ।স্বাক্ষী দিচ্ছে ১৯১৫ সালের ৪ মার্চ কয়লা চালিত এই ইঞ্জিন।ওই সময় এই ট্রেন দিয়ে পাকশি রেল ব্রিজ উদ্বোধন করা হয়।দেশ স্বাধীনের পর রেল অঙ্গনে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে উন্নয়নে তেমন কোন ছোঁয়া লাগেনি।বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেল খাতকে যুগোপযোগি করতে দুঃসাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন।তার ধারাবাহিকতা চলমান রাখতে পার্শ্ববর্তী বন্ধুদেশ ভারতের সাথে রেলসংযোগ স্থাপনের জন্য চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার ও রেলপথ মন্ত্রণালয়।আট হাজার ১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয় প্রকল্প ২০১৮ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে চিলাহাটি ও হলদিবাড়ি হয়ে রেলসংযোগ চালু ছিল।১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের পর এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।মুলত দুই দেশের রেল যোগাযোগের ইতিহাস অনেক পুরোনো।

১৯৬২ সালে দর্শনা হতে জগতি পর্যন্ত৫৩.১১ কিঃমিঃ ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে রেলওয়ের যাত্রা শুরু হয়। ১৮৭৪ সাল হতে ১৮৭৯ সালের মধ্যে পাকশির কাছ থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত মিটারগেজ এবং পদ্মা নদীর অপর পাড়ে কুষ্টিয়া প্রান্তে দামুকদিয়া থেকে পোড়াদহ পর্যন্ত ব্রডগেজ রেললাইন নির্মিত হয়।১৯০৯ সালে পোড়াদহ হতে ভেড়ামারা পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইনকে দ্বৈত ব্রডগেজ লাইনে রূপান্তর করা হয়।১৯১৫ সালের ১ জানুয়ারী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ চালুর মধ্য দিয়ে দর্শনা থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত সরাসরি রেলসংযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়।১৯২৪ সালে সান্তাহার হতে পার্বতীপুর এবং ১৯২৬ সালে পার্বতীপুর থেকে চিলাহাটি মিটারগেজ রেলওয়ে লাইন ব্রডগেজে রূপান্তর করা হয়।

ওই সময় শিয়ালদহ ও শিলিগুড়ির মধ্যে সান্তাহার -পার্বতীপুর হয়ে দার্জিলিংও নর্থবেঙ্গল এক্সপ্রেস নামে দ্রুতগতির ট্রেন চালু হয়।রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই রুটটি তখন ব্যাকবোন হিসেবে বিবেচিত হয়।১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর লিংকটি বন্ধ হওয়ায় দুই দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী রেলওয়ে সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্রমন্বয়ে বন্ধ হয়ে যায়।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আন্তঃআঞ্চলিক যোগাযোগ জোরদার করণের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন খাতের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট ৭টি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট এর মধ্যে ৪টিতে রেলসংযোগ স্থাপিত হয়।২০১৫ সালে ২৭ মে নয়াদিল্লিতে দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনায় চিলাহাটি এবং হলদিবাড়ির মধ্যে দিয়ে রেললাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রস্তাবটি প্রণীত হয়েছে।এই রেললাইন চালু করা হলে বাংলাদেশের মোংলা পোর্ট হয়ে ভারতের উত্তর -পূর্ব অংশ, নেপাল এবং ভুটান ও দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানির অবকাঠামো মানোন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম জোরদার হবে।

চিলাহাটি স্টেশনে লুপ লাইন নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ২.৮৪০০ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।চিলাহাটি স্টেশন  থেকে বর্ডার পর্যন্ত নব-নির্মিত ৬.৭২ কিঃমিঃ মেইন লাইন রেলপথ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।প্রকল্পের হালনাগাদ ৭টি বক্স কালভার্ট, ৮টি লেভেল ক্রসিং গেইট এবং সিগন্যালিং সিস্টেমের কাজ শেষ হয়েছে। ইঞ্জিন ট্রায়াল সম্পন্ন করা হয়েছে।

এছাড়া দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচলের জন্য চিলাহাটি স্টেশনে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন, একটি নতুন আইল্যান্ড প্লাটফর্ম, প্লাটফর্ম শেড,একটি ফুট ওভারব্রিজ,৪টি রেইজ প্লাটফরমসহ ২টি ওয়াশপিট লাইন নির্মাণের প্রয়োজন রয়েছে।২০২৩ সালে ৩১ ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কোথা আছে।

IPCS News /রির্পোট, আবুল কালাম আজাদ।