বুধবার ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

রাজশাহীতে পেশা বদলেছে চার হাজার শিক্ষক,ঝরেছে ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী

আপডেটঃ ৭:৩৯ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ

অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে রাজশাহীর সাড়ে চারশ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।রোববার থেকে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান শুরু হয়েছে।কিন্তু করোনার দেড় বছরে দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।পাঠদান শুরু হলেও এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটের কারণে চালু করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।ইতোমধ্যে ঝরে পড়েছে ৩৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী।তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছে না বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা।বেতন না পেয়ে চাকরি ছেড়েছেন প্রায় চার হাজার শিক্ষক।তারা শিক্ষকতা ছেড়ে পেশা বদল করেছেন।এছাড়া বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীদের বেতনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারী ব্যক্তিরা।রাজশাহী কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম সারওয়ার স্বপন জানান, গত বছরের ১৭ মার্চ সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার আগে বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত রাজশাহী জেলা এবং মহানগরে প্রায় সাড়ে চারশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল।এর মধ্যে জেলায় ছিল দুইশ এবং মহানগরে আড়াইশ।

এ সময় জেলায় ২৫-৩০ হাজার এবং মহানগরে ৩৫-৪০ হাজার শিক্ষার্থী এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছিল।জেলা এবং মহানগর মিলিয়ে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যা ছিল সাত হাজার।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে যাওয়ার পরে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি জানান, জেলায় ইতোমধ্যে ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।মহানগরীতে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা শতাধিক।ইতোমধ্যে চার হাজার শিক্ষক ও কর্মচারী বাধ্য হয়ে চাকরি ছেড়েছেন।

বাকি শিক্ষক এবং কর্মচারীরাও অনিয়মিত বেতন পাচ্ছেন।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে রাজশাহী মহানগরীর দাশপুকুর এলাকার শিক্ষা স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক, অধ্যক্ষ ও রাজশাহী কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন জানান, করোনা মহামারির আগেও তার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল তিনশ।

এখন অর্ধেকেরও কম।সামনে কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে- তা বলতে পারছি না।জেলার বাগমারা উপজেলার ফতেপুর এলাকার বাসিন্দা এমদাদুল হক।তিনি ফতেপুর এলাকায় নাহার মডেল এবং রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারিতে গ্রিন সিল্ড নামে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন।তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার আগে নাহার মডেলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩২০ জন।

এখন আছে একশর নিচে।এছাড়া শিক্ষক এবং কর্মচারী কমে ১৫ জন থেকে তিনজন আছেন।তাছাড়া গ্রিন সিল্ড স্কুলে শিক্ষার্থী ছিল আড়াইশ।এখন আছে ১০৬ জন।শিক্ষক ও কর্মচারী ছিলেন ১৯ জন।বর্তমানে আছেন ছয়জন।তিনি বলেন, তারপরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু রেখেছি।অভিভাবকরা ঠিকমতো টিউশন ফি দিচ্ছেন না।

এ কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া যাচ্ছে না।ফলে অনেক শিক্ষকই অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।গ্রিন সিল্ড এর সাবেক শিক্ষক ইউনুস আলী জানান, বেতন না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে এখন ব্যবসা করছেন।রাজশাহী কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন বলেন, আমারও তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঁচশ’ শিক্ষার্থী ছিল।এখন অর্ধেকেরও কম।শিক্ষক ও কর্মচারী ৩০ জন থাকলেও এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে।আগামীতে চালাতে পারব কী না-তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছি।

IPCS News Report : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী