শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধিতে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীঃ

আপডেটঃ ২:২৭ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সরকারি চাকরি থেকে অবসরের সময়সীমা ৩ বছর বাড়িয়ে ৬২ বছর করার প্রস্তাব দিয়েছেন।বর্তমানে অবসরের সাধারণ বয়সসীমা ৫৯ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারীদের ৬০ বছর।এ ছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার নানা মহলের চাপ থাকলেও এখনি তা নিয়ে ভাবছে না সরকার।রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, সরকারি চাকরি-জীবীদের অবসরের বয়সসীমা বা চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানো সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি তাই এ মুহূর্তে এসব বিষয়ে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেই।৬ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করে একটি চিঠি দেন।চিঠিতে অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, আমাদের দেশে সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৫৯ বছর।এ বিষয়টি ১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল ৫৮ বছর আর ব্রিটিশ আমলে ছিল ৫৫ বছর।

১৯৭২ সালে আমাদের দেশে মানুষের জীবনসীমা ছিল মাত্র ৫৮ বছর।এসব কিছু বিবেচনা করলে আমাদের দেশে সরকারি চাকরিতে অবসরের বয়সসীমা আরও তিন বছর বাড়িয়ে ৬২ বছর করা যায়।এর কারণ হিসেবে অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, আমাদের গড় আয়ু বর্তমানে ৭০ বছরের বেশি।এ অবস্থায় আমাদের সিনিয়র সিটিজেনের বয়সসীমা ৬৫ বছর নির্ধারণ করা যথাযথ হবে বলে আমি মনে করি।

অর্থমন্ত্রী উক্ত চিঠিতে আরো উল্লেখ করেন-আমরা ৬০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছি।এসব সিটিজেনের জন্য আমরা এখনও তেমন বিশেষ সুবিধা দিতে পারছি না।তবে তাদের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ সুবিধা প্রদানের সরকারি চিন্তাভাবনা রয়েছে।অর্থমন্ত্রী এ চিঠি দেয়ার পর এ বিষয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠে সংশ্লিষ্টরা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো চিঠির একটি অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়েও পাঠায় অর্থ বিভাগ।চিঠিটি পড়ে আছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দফতরে।এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিধি) মো. আবদুল হাকিম বলেন, চাকরির অবসরের বয়সসীমা ৩ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব-সংবলিত অর্থমন্ত্রীর একটি ডিওর অনুলিপি পেয়েছি।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো ধরনের নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে হলে বিদ্যমান ‘সরকারি কর্মচারী (অবসর) আইন, ১৯৭৪ সংশোধন করে মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিতে হবে।উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধা সরকারি কর্মচারীরা অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করার দাবিতে সভা-সমাবেশ করে আসছেন।

এবং বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে একাধিক মামলাও করেছেন তারা।আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা সরকারি কর্মচারীদের অবসরের সময়সীমা ৬২ করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হলে তা সর্বসম্মতিক্রমে বাতিল হয়।পরে অর্থমন্ত্রী অবসরের সময়সীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার প্রস্তাব করেছেন।

অপরদিকে বেকার যুবকরা আন্দোলন করে আসছে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে।বর্থমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সীমা হচ্ছে ৩০ এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩২বছর।আন্দোলন-কারীদের যুক্তি, সেশনজটের কারণে তাদের শিক্ষাজীবন থেকে মূল্যবান কয়েকটি বছর হারিয়ে যায়।

চাকরি উপযোগী শিক্ষা অর্জনের পর আর মাত্র ২-৩ বছর সময় হাতে থাকে।পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরের ওপর।গত ২০ নভেম্বর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের অনুপস্থিতিতে প্রশ্নের জবাব দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগে বিশ্ব-বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে তেমন টা নেই।ফলে শিক্ষার্থীরা সাধারণত ১৬ বছরে এসএসসি, ১৮ বছরে এইচএসসি এবং ২৩ থেকে ২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকেন।

সাধারণ প্রার্থীদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর বিধায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য ছয় থেকে সাত বছর সময় পেয়ে থাকেন।এ ছাড়া ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী চাকরির জন্য আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এক থেকে দুই বছর সময় লাগলেও তা গণনা করা হয় না।

IPCS News Report : Dhaka :