মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

কাঙ্ক্ষিত সময়ে মেট্রোরেল চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা

আপডেটঃ ১:২৮ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ১০, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ

চলতি বছরেই বিজয় দিবসে মেট্রোরেলের অর্ধেক অংশ চালুর লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।মেট্রোরেল নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষও সে লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছিল।তবে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এখন বলছে, এ সময়ে মেট্রোরেল চালু হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে তারা।এজন্য চলমান করোনা মহামারীকে দায়ী করা হচ্ছে।উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন-৬)।প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।দুই ভাগে নির্মাণকাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।এক ভাগে পড়েছে উত্তরা-আগারগাঁও অংশ, আরেক ভাগে আগারগাঁও-মতিঝিল।মতিঝিল থেকে আবার কমলাপুর পর্যন্ত লাইনটি বর্ধিত করার কাজ শুরু হয়েছে।শুরুতে মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চালুর কথা জানিয়েছিল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

পরে তা বাড়িয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।সর্বশেষ এ লক্ষ্য চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এগিয়ে নেয়া হয়, যা করোনাভাইরাসের কারণে অনিশ্চয়তায় পড়েছে।মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক গতকাল জানান, আগামী ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের প্রথম অংশ চালু হবে কিনা তা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।তবে এখন পর্যন্ত সব কাজ স্বাভাবিকভাবে চলছে।কাজের গতি ঠিক রাখতে দিনে ও রাতে দুই শিফটে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

রাজধানীতে চলমান মেট্রোরেল প্রকল্পগুলোর নির্মাণকাজের অগ্রগতির তথ্য জানাতে গতকাল এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছেন মেট্রোরেল প্রকল্পে কর্মরত ৪৮ জন কর্মী।আর বাংলাদেশে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর এখন পর্যন্ত আক্রান্ত কর্মীর সংখ্যা ৫১৮।তবে কারো মৃত্যু হয়নি।মেট্রোরেল প্রকল্পে বর্তমানে কাজ করছেন সাত হাজার কর্মী। এর মধ্যে ছয় হাজার বাংলাদেশের, বাকি এক হাজার বিদেশী কর্মী। মেট্রোরেলের কর্মীদের করোনাভাইরাসজনিত চিকিৎসাসেবা দিতে গড়ে তোলা হয়েছে দুটি ফিল্ড হাসপাতাল।গাবতলী কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের ফিল্ড হাসপাতালে ১০ শয্যা আর উত্তরার পঞ্চবটী কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের ফিল্ড হাসপাতালে ১৪টি শয্যা রয়েছে।

হাসপাতাল দুটিতে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে।স্থাপন করা হয়েছে কার্ডিয়াক মনিটর, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি।এগুলোতে মেট্রোরেল প্রকল্পে কর্মরত দেশী-বিদেশী প্রকৌশলী, পরামর্শকসহ কর্মীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিচ্ছেন।মেট্রোরেলের কর্মীদের মনোবল বাড়াতে প্রয়োজনে এসব হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।গতকালের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রকল্পে কর্মরত বিদেশী প্রকৌশলীরা নিরাপত্তার স্বার্থে এখন আর দিনের বেলায় সাইটে যাচ্ছেন না।

এদিকে মেট্রোরেল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডিএমটিসিএলের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের দিল্লি মেট্রোর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।এমএএন ছিদ্দিক এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বাংলাদেশে কিছু অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।তাদের হাতে-কলমেও কিছু প্রশিক্ষণের দরকার হবে।এজন্য দিল্লি মেট্রোর সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে।তবে বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে এখনো এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়নি।করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে।

এখন পর্যন্ত উত্তরা-মতিঝিল-কমলাপুর মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৬১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।এর মধ্যে প্রথম ভাগ উত্তরা-আগারগাঁও অংশের অগ্রগতি ৮৩ দশমিক ৫২ শতাংশ।এ অংশে ভায়াডাক্টের পরিমাণ ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার, যার পুরোটাই নির্মাণ করা হয়েছে।ভায়াডাক্টের ওপর রেলপথ আর বিদুৎ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ চলছে।নয়টি স্টেশনের সবক’টিরই কাঠামো নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।যান্ত্রিক, বিদ্যুৎ আর কাঠের কাজ চলমান রয়েছে উত্তরা নর্থ থেকে পল্লবী পর্যন্ত চারটি স্টেশনে।আর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের অগ্রগতি ৫৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ। মেট্রোরেলের ট্রেনগুলো তৈরি করা হচ্ছে জাপানে। এর মধ্যে প্রথম সেট ট্রেনটি গত ৩১ মার্চ মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছেছে।এটি ২৩ এপ্রিল উত্তরার ডিপোয় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।এরপর পর্যায়ক্রমে আরো ২৩টি ট্রেন দেশে এসেছে পৌঁছবে।

IPCS News/রির্পোট, আবুল কালাম আজাদ।