রামেক হাসপাতাল কেন্দ্রীক অনুমোদনহীন দুই ডজনাধিক ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার
আপডেটঃ ৫:০১ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ০২, ২০২০

নিউজ ডেস্কঃ
রাজশাহী নগরীতে পরিচালিত অন্তত ডজন খানেক ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনুমোদনহীন বা নবায়নকৃত নয় বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালকেন্দ্রীক।হাসপাতালের প্রাচীরের আশে-পাশে বা একটু দূরে লক্ষীপুর এলাকায় গড়ে উঠেছে সেগুলো।মূলত হাসপাতালে আসা রোগীদের ভাগিয়ে নিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করায় হলো এসব ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর কাজ।অভিযো উঠেছে, রাজশাহী সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দপ্তরকে ম্যানেজ করেই এসব প্রতিষ্ঠানে চলছে রোগীর মাণহীন চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের কাজ।ফলে অনেকাংশে প্রতারণার শিকারও হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগী ধরা দালালরাই ভরসা এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর।
ফলে প্রতারণার হারও বাড়ছে ব্যাপক হারে।এদিকে এসব রুখতে স্বাস্থ্য অধিপ্তরের নির্দেশে শিঘ্রই অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে পারে রাজশাহীর প্রশাসন।স্বাস্থ্য অধিপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক বিভাগের পরিচালক ডাক্তার ফরিদ হোসেন মিঞা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।ওই চিঠিতে সকল জেলায় অনিবন্ধিত, অবৈধ, নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরিচালিত এবং সেবার মাণ খারাপ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক স্বাস্থ্য অধিপ্তরের পরিচালকের দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠাতেও বলা হয়েছে।সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহীর অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার হলো দালাল নির্ভর।কেবল দালালদের মাধ্যমেই রোগী ভাগিয়ে এনে প্রতারণা করে কোনোমতে টিকে আছে এসব প্রতিষ্ঠান।
ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিবন্ধনহীন বা নবায়নযোগ্য নয় এমন অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা আই,পি, এস নিউজ এর হাতে এসে পৌঁছেছে।যেগুলোর রাজশাহী নগরীর লক্ষীপুর এলাকায় গড়ে উঠেছে।অধিকাংশই অনুমোদন নিলেও পরবর্তিতে নবায়নযোগ্য নয় বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।রয়েছে জনবল ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের সংকট।অধিকাংশ ক্লিনিকের নেই নিজস্ব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, ১০ থেকে ৫০ বেডের হাসপাতাল বা ক্লিনিকের জন্য লাইসেন্স বা নবায়ন ফি বিভাগীয় বা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৫০ হাজার টাকা, জেলা পর্যায়ে ৪০ হাজার ও উপজেলা পর্যায়ে ২৫ হাজার টাকা।৫১ থেকে ১০০ বেডের বেসরকারী হাসপাতালের জন্য ফি একইভাবে পর্যায়ক্রমে এক লাখ টাকা, ৭৫ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা।
তবে রাজশাহী নগরীর অনুমোদনপ্রাপ্ত অধিকাংশ ক্লিনিকই কাগজে-কলমে ১০ বেডের অনুমোদন নিলেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও জনবল সংকট সত্বেও এর চাইতে বেশি বেড বসিয়ে রোগী ও সরকারের সঙ্গে প্রতারণা করছে।এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, রাজশাহী বিভাগে মোট ৯৬০ টি বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল রয়েছে।যার মধ্যে রাজশাহী জেলায় ১৫৭টি।রাজশাহী নগরীর ১২০টি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত রাজশাহীর প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।৪০টি ক্লিনিক ও হাসপাতাল এবং ৮০ ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়ে এই অ্যাসোসিয়েশন গড়ে তোলা হয়।
অন্যদিকে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, রবিবার থেকে প্রশাসনের অভিযান হওয়ার খবর প্রকাশের পর গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন।অভিযানের ধরন দেখে পরবর্তি সিন্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও ওই বৈঠকে জানানো হয়।জানতে চাইলে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মখলেসুর রহমান বলেন, ‘অনেকে চিকিৎসা সেবার নামে অনিয়ম করছে।তাদের অনুমোদন নেই।আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এসকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি স্বাস্থ্য বিভাগে।কাজেই আমরাও চাই অবৈধ কোনো প্রতিষ্ঠান যেন ব্যবসা করতে না পারে।রাজশাহী জেলার সিভির সার্জন ডা. এনামুল হক জানান, রাজশাহী মহানগরীসহ জেলার ৯টি উপজেলার রেজিস্ট্রেশন বিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা করা হয়েছে।আমরা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শিঘ্রই অভিযানে নামবো।
IPCS News /রির্পোট, আবুল কালাম আজাদ।