মঙ্গলবার ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

পুলিশ হবে জন-গণের প্রথম ও শেষ ভরসাস্থল; আরএমপি’র ৩০তম প্রতিষ্ঠা-বার্ষিকীতে আইজিপি

আপডেটঃ ৭:৫০ অপরাহ্ণ | জুলাই ০২, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

আরএমপি নিউজঃ রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে দিন উদযাপন করলো আরএমপি।শুক্রবার (১ জুলাই ২০২২) বেলা ১১ টায় ভেড়িপাড়া মোড়ে প্রধান অতিথি মহোদয় বেলুন ফেস্টুন ও কবুতর অবমুক্তকরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা-বার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এবং সেখান হতে বর্ণাঢ্য র‌্যালি পুলিশ লাইনসে্ এসে শেষ হয়।পরবর্তীতে তিনি পুলিশ লাইনসে্ বিশেষ রক্তদান কর্মসূচি ও অনাবাদী জমিতে সবজি চাষের উদ্বোধন এবং মৎস্য পোনা অবমুক্তকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।পরর্তীতে বিকেল সাড়ে ৩ টায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনসে্ আরএমপিতে কর্মরত অফিসার-ফোর্স এবং নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার), ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ মহোদয়।

অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন আরএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মো: আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়।ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ দেশের জনগণের প্রথম ও শেষ ভরসাস্থল হতে চায়।সে লক্ষ্যে সকল পর্যায়ের পুলিশ সদস্যকে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করার আহবান জানান তিনি।

আইজিপি বলেন, দেশ ও সমাজ যত এগিয়ে যাবে পুলিশের প্রতি জনগণের প্রত্যশা তত বাড়বে।জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দিতে পুলিশকে প্রস্তুত হতে হবে।তিনি বলেন, সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে এখন ছাত্র শিক্ষককে পিটিয়ে মারছে।এক শিক্ষক অপর শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রদের লেলিয়ে দেয়।সামাজিক অপরাধের ফলে সৃষ্ট এ ধরনের জঘন্য অপরাধ মোকাবেলা করতে হবে।

সবাইকে হাতে হাত রেখে দেশ ও সমাজকে রক্ষা করতে হবে।আইজিপি বলেন, বর্তমানে চিরায়ত অপরাধ যেমন- চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি কমছে।আবার অর্থনৈতিক অপরাধ, সাইবার ক্রাইম বাড়ছে।এ ধরনের অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশকে প্রস্তুত থাকতে হবে।বিট পুলিশিং এবং কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে এসব অপরাধ সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিশাল ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা এ দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের উন্মেষ ঘটানোর অপপ্রয়াস দেখেছি।বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ।এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টাকে সম্মিলিতভাবে রুখে দিতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।

আইজিপি নগরবাসীর নিরাপত্তায় আরএমপির অনন্য ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ইনোভেটিভ পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের নিরাপত্তায় আরও সচেষ্ট হওয়ার আহবান জানান।অনুষ্ঠানের শুরুতে আরএমপির কার্যক্রমের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রর্দশন করা হয়।এ উপলক্ষে ‘অগ্রযাত্রায় আরএমপি’ শীর্ষক ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

পুলিশ কমিশনার বলেন, আইজিপি মহোদয়ের নির্দেশনায় রাজশাহী মহানগরীকে নিরাপদ আবাসস্থল করতে সাইবার ক্রাইম ইউনিট গঠন ও অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার গঠন করে নগরজুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণের কিশোর গ্যাং ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি তাদেরকে মনিটরিং করা হচ্ছে।

যার কারণে রাজশাহীতে চুরি, ছিনতাই-সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে আরএমপি।পুলিশি সেবা জনগণের দৌড় গোড়ায় পৌছিয়ে বিট পুলিশিং কার্যক্রম ও কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে গতিশীল করা হয়েছে।এর সুফল মহানগরীর দূর্গম চরাঞ্চলের জনগণও পুলিশি সেবা পাচ্ছেন।তিনি আরো বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালীন নগরবাসীর দৌড়গোড়ায় পুলিশি সেবা ও মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে আরএমপি।

লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায়, দুস্থ, প্রতিবন্ধী নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে এবং করোনায় অক্সিজেন সিলিন্ডারের স্বল্পতায় আরএমপি’র সৃষ্ট “পুলিশ কোভিড অক্সিজেন ব্যাংক” ১৫ শত পরিবারকে বিনামূল্যে বাড়িতে অক্সিজেন সেবা দিয়েছে।যা বাংলাদেশে এক অনুসরনীয় পদক্ষেপ।আরএমপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথি-সহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, ভিসি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জনাব আবু হাসান মোহম্মদ তারিক, বিপিএম, প্রিন্সিপাল (এ্যাডিশনাল আইজি), বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহী, জনাব মো: আব্দুল বাতেন, বিপিএম, পিপিএম, ডিআইজি, রাজশাহী রেঞ্জ ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আরএমপি, রাজশাহী রেঞ্জ, বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারগণ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।এছাড়াও সন্ধ্যায় পুলিশ লাইনসে্ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, মাননীয় মেয়র, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন।

IPCS News : Dhaka : আরএমপি নিউজ : রাজশাহী।