বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ নগরবাসী

আপডেটঃ ৪:৪৫ অপরাহ্ণ | মার্চ ১৯, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

রাজশাহী:-মশার কামড়ে অতিষ্ঠ রাজশাহী মহানগরবাসী।শীতের সময় মশা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় অনেকটাই নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন ছিল নগরবাসী।
গরম পড়ার সাথে সাথে বেড়ে গেছে মশার উৎপাত।বাড়ির আনাচে কানাচে আবর্জনা ও ছোট খটি জলাশয়ে জন্ম নিচ্ছে মশা।সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পরপরই শুরু হয় ঝাঁকে ঝাঁকে মশার উৎপাত।বাধ্য হয়ে সন্ধ্যার আগেই কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন নগরবাসি।রাত আসতেই বাধ্য হয়ে অনেকেই মশারি টাঙিয়ে নামাজ আদায়, লেখাপড়া, এমনকি  খাবারও খাচ্ছেন মশারির ভেতরেই।নগরীর শিরোইল এলাকার মুক্তারি বেগম বলেন, মশার উপদ্রবে  অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।দিনেও মশার উৎপাত বেড়ে গেছে অনেকগুণে।বাথরূম, রান্নাঘর, এমনকি শয়ন কক্ষেও নামাজ আদায় কিংবা খাবার খেতে বসে আরাম নেই কারো। মশার কয়েলেও মশা তাড়ানো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মশা নিধন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় গরম পড়ার সাথে সাথে বহুগুনে বেড়েছে মশার উপদ্রব।মশার আক্রমণ যেভাবে শুরু হয়েছে তাতে দৈনন্দিন কাজ করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।সিটি কর্পোরেশনের (রাসিকের )উচিত অতিদ্রুত  মশক নিধন অভিযান জোরদার করা।নগরীতে মশার উপদ্রব এতটাই বেড়েছে যে  নগরবাসীর ঘুমের বারোটা বেজেছে।

বহুতল ভবনের ৮-৯ তলাতেও পৌঁছেছে মশার দৌরাত্ম্য।আর নিচের তলার অবস্থা তো দিনে রাতে সমান।হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসাতেও মশার বিচরণে বিপর্যস্ত নগর জীবন।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দিনের বেলায়ও ক্লাসে মশার কামড় হজম করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

রাজশাহী কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান পলাশ জানায়, মশার কামড়ে ক্লাসে বরাবরই মনোযোগ নষ্ট হয়।এমনকি মশার কামড়ে অতিষ্ঠ।বিষয়টা নিয়ে বিব্রত খোদ রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ।তবে তার একার পক্ষে মশা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।একই অবস্থা রাজশাহী কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলগুলোতে।

রাজশাহী কলেজের মুসলিম হোস্টেল, হিন্দু হোস্টেল, রাজশাহী কলেজ মহিলা হোস্টেল, রহমতুন্নেছা হোস্টেলে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা।আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ তারা।মশারি টানিয়ে, কয়েল জ¦ালিয়ে, ফ্যান চালিয়ে কাথা মুড়ি দিয়ে মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে প্রাণান্ত চেষ্টা করেন তারা।তবে খুব একটা লাভ হয় না তাতেও।

এ সমস্যা সমাধানে কলেজ প্রশাসনসহ নগর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ আশা করছেন তারা।মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের রোগীরাও।দিনের বেলাতেও মশার কামড়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন রোগী ও তার স্বজনরা।রাতের বেলা জরুরি বিভাগে ঢুঁ মারলে দেখা যায়, মশারির পাশাপাশি কয়েল জালিয়ে ঘুমাচ্ছেন সবাই।

এরপরেও রাতের বেলা মশার কামড়ে ঘুম ভেঙে যায় বলে অভিযোগ করেন দুর্গাপুর উপজেলার তেবিলা গ্রামের বাসিন্দা বাবর আলী।সরকারি হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি হাসপাতালেও একই অবস্থা।চাঁপাইনবাবগঞ্জের আবদুল হাকিম তার বোনকে ভর্তি করেছেন নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে।তিনি জানান, মশার অত্যাচারে দিনের বেলাতেও টেকা যায় না।

রাজশাহীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা মিনহাজ তৌহিদ বলেন, দিনে দিনে বেড়েই চলেছে মশার অত্যাচার।ঘরে-বাইরে সবখানেই মশার অত্যাচার।এখন নগরীর একটি প্রধান সমস্যা মশা।আমাদের চাওয়া নিয়মিত মশা নিধন অভিযানের পাশাপাশি বিশেষ কোনো পদক্ষেপ বা পদ্ধতি যেন রাসিক গ্রহণ করে।

তবে সিটি কর্পোরেশন বলছে, মশার উপদ্রব কমাতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন।নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে চালিয়েছেন ক্রাশ প্রোগ্রাম।ক্রাশ প্রোগ্রামের অধীনে সম্প্রতি পরিষ্কার করেছেন রামেক হাসপাতাল এলাকা।

রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন বলেন, নগরীজুড়ে মশার আধিক্য একটু বেশি মনে হচ্ছে।মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম চলমান আছে।নগরীজুড়ে মশার লার্ভা তৈরি হয় এমন স্থানে কেরোসিন ও ডিজেলের মিশ্রণ প্লে করা হচ্ছে।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ : রাজশাহী।