শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

অনিয়মের মধ্য দিয়েই চলছে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম

আপডেটঃ ৬:৪৪ অপরাহ্ণ | মার্চ ১৫, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দিনাজপুর এর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা অবৈধ পন্থায় লাখ লাখ টাকার মালিক বনে গেছেন।ক্ষমতার অপব্যবহার, টেন্ডারের দুর্নীতি, বিভিন্ন মালামাল ক্রয়ে ঘাপলা, চেক লেনদেনে মোটা অংকের কমিশনসহ নানা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বোর্ডটি।সব মিলিয়ে এই শিক্ষা বোর্ডটি এখন অবৈধ আয়ের ‘আলাদিনের চেরাগ’! তাই তো সকল নিয়ম-নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বছরের পর বছর বোর্ডের ওইসব কর্মকর্তারা বদলি বা পদায়ন নেন না। বোর্ডের সবকিছু চেটেপুটে খেয়েও যেন তাদের পেটই ভরছে না।কর্মকর্তারা এখানে কোন মধু পেয়েছেন যে, বদলি বা পদায়ন নিতে তাদের এতো অনীহা।কেনই বা এক দপ্তরে এতোদিন একাধারে থাকছেন ? এই প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড সুত্র জানান, বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা অবৈধ অর্থ উপার্জনের জন্য বছরের পর বছর এ দপ্তরে পরে রয়েছেন।

বোর্ডের মানোন্নয়ন বা কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে তাদের কোনো ভুমিকা নেই।তাদের সম্পূর্ণ মনোযোগ কিভাবে অবৈধ টাকা উপার্জন করা যায়।ফলে বোর্ডটিতে সৃষ্টি হয়েছে চরম আমলাতান্ত্রিক জটিলতা।হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবা প্রত্যাশীরা।কর্মকর্তারা কৌশলে কর্মচারীদের মধ্যে বিভাজন নীতি সৃষ্ট করে বোর্ডের কার্যক্রমকে পরোক্ষভাবে স্থবির করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বোর্ডসুত্র আরো জানায়, প্রত্যেক বোর্ডেই একটি স্বতন্ত্র কম্পিউটার কেন্দ্র থাকলেও দিনাজপুর বোর্ডে তা নেই।অথচ ওই কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে কোনো ভুমিকা না রেখে শুধু নিজে লাভবান হবার স্বার্থে কম্পিউটার কেন্দ্র স্থাপন করছেন না।এতে বোর্ডের প্রতিবছর ব্যয় হয় ২০ লাখ টাকার উপরে।আগে ভাড়া বিল্ডিং এর দোহাই দিয়ে কম্পিউটার কেন্দ্র নির্মাণ হয়নি।

এখন নিজস্ব বিল্ডিংয়ে যাবার ৬ বছর অতিক্রম হলেও তা হয়নি।এ নিয়ে ইতোপূর্বে শিক্ষাবোর্ড কর্মচারী পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধনসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।কারণ, তারা এক দপ্তরে একাধারে থেকে লাখ লাখ টাকা অবৈধ আয় করে বিভিন্নজনকে ম্যানেজ করে চলছেন।

তাই তাদের ধরার বা বলার কেউ নেই।বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকলেও এর কার্যকর কোনো প্রয়োগও নেই।ফলে ওই কর্মকর্তারা ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছেন।বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ফারাজ উদ্দীন তালুকদার গত ১৪ মার্চ বোর্ডে পদায়নের ৯ বছর পূর্তি করেছেন।

অথচ সরকারি কলেজের শিক্ষক বদলি/পদায়ন নীতিমালা-২০২০ এর ১০.০ উপধারায় স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে-কোন কর্মকর্তা দপ্তর/অধিদপ্তর/সংস্থায় একাধিক্রমে ০৩ (তিন) বছরের বেশি কর্মরত থাকতে পারবেন না।তবে প্রকল্পে নিয়োজিত কর্মকর্তার ক্ষেত্রে প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল পর্যন্ত বিবেচ্য হবে।অথচ এর কোনো প্রয়োগ নেই।

শুধু তাই নয়, ওই নীতিমালারই ১২.০ উপধারায় বলা হয়েছে- ‘এক কর্মকর্তা সমগ্র চাকরি জীবনে ০৬ (ছয়) বছরের বেশি দপ্তর/অধিদপ্তর/সংস্থা/প্রকল্পে কর্মরত থাকতে পারবেন না’।এর পরেও ওই কর্মকর্তারা কিভাবে ৯ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত এক দপ্তরে থাকেন সেটিই এখন প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে।

আসলে কোন খুঁটির জোরে তারা এভাবে দিনকে রাত, রাতকে দিন বানাচ্ছেন তা ভাবা প্রয়োজন।শুধু একজন ফারাজ উদ্দীন তালুকদার নয়, এ তালিকায় আরো রয়েছেন-সহকারী সচিব ইব্রাহিম আজাদ।যিনি ১৩/০৫/২০১৩ইং তারিখে বোর্ডে যোগদান করেছেন।একইভাবে সহকারী কলেজ পরিদর্শক আব্দুল মান্নান ২৩/০২/২০১২ইং তারিখ থেকে রয়েছেন।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর তোফাজ্জুর রহমান ০৫/০৩/২০১২ইং থেকে, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ মানিক ২০/১২/২০১২ইং থেকে, হিসাব রক্ষক আনোয়ার হোসেন ২২/০৯/২০১৩ইং থেকে এই বোর্ডে রয়েছেন।এসব কর্মকর্তাগণ অর্থের বিনিময়ে কাজ করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।পরীক্ষা কেন্দ্র যেখানে প্রয়োজন নেই, সেখানেও দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আবার যেখানে প্রয়োজন সেখানে দেয়া হয়নি।এ ব্যাপারে দিনাজপুর বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।তবে কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ফারাজ উদ্দীন তালুকদার বলেছেন, পদায়নের ওই নীতিমালা শুধুমাত্র চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয়েছে।

অন্যান্যদের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ হতে দেখিনি।আমি সততার সাথে সকল প্রকার লোভ-লালসার উর্দ্ধে উঠে কাজ করছি।আমার ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন উঠলে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন।আমি উত্তর দিতে প্রস্তুত।

IPCS News : Dhaka : এম এ সালাম : দিনাজপুর।