বৃহস্পতিবার ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

রেলের রানিং স্টাফদের মাইলেজ জটিলতা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে

আপডেটঃ ৫:২৫ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ২৬, ২০২২

নিউজ ডেস্কঃ

মাইলেজ জটিলতা নিয়ে অসন্তোষ বেড়েই চলেছে রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মধ্যে।পরিস্থিতি এতোটাই ঘোলাটে যে, ট্রেন অচলের হুমকি দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েক দফায়।এবার ‘ডিউটি আওয়ার’ ৮ ঘন্টা পূর্ণ হওয়ায় রাজশাহী থেকে পার্বতিপুর গামী “উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনে “কোন গার্ড টিটি এলএম  না উঠায়,এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ( বেলা সাড়ে তিনটায়) ট্রেনটি রাজশাহী স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়নি।বিষয়টির সমস্যা নিরসনে পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদারসহ পশ্চিম রেলের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে আন্দোলনকারী রানিং স্টাফ দের সাথে সংকট নিরসনে আলোচনায় বসেন।এ সময় আন্দোলনকারী রানিং স্টাফরা মহাব্যবস্থাপকের নিকট রেলের বিভিন্ন অনিয়ম  তুলে ধরেন।বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতি রাজশাহীর সভাপতি বলেন, ‘আগেই আমরা ঘোষণা দিয়েছি আমাদের সমস্যার সমাধান না হলে ৮ ঘন্টার বেশি ট্রেন না চালানোর।

তারা আরো বলেন, রানিং স্টাফরা ঝড়-তুফান শীত গ্রীষ্ম বর্ষা হরতাল অবরোধেও জীবনের মায়া উপেক্ষা করে জাতীয় স্বার্থে ট্রেন চালান।সবাই যখন প্রচন্ড শীতে রাতে লেপের নিচে থাকে তখন আমরা ৮০ থেকে ১০০কি:মি গতির বাতাসে ট্রেন চালায়।যখন ঝড়ের ১০নং মহাবিপদ সংক্ষেতে সবাই পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকেন তখনও রানিং স্টাফরা ট্রেন চালিয়ে যায়।

পুজা বড়দিন সবাই যখন আনন্দে বিভোর থাকে তখন ও আমরা ব্যথিত হৃদয়ে ট্রেন চালায়।হরতাল অবরোধে অবৈধ পেডেল ক্রসিংএ রেল লাইন তুলে ফেললে দূর্ঘটনায় আমরা জীবন দিই।ট্রেন চালকেরা TA/DA পান না।তারা ট্রেন নিয়ে প্রতি ১০০ মাইল পুরুনের জন্য ১ দিনের মূল বেতনের সমপরিমান টাকা পান।

কম বা বেশি যা আনুপাতিক হারে কম বা বেশি মাইলেজের টাকা পান।যেমন HSC বিজ্ঞান পাস একজন সহকারী ট্রেন চালকের প্রারম্ভিক মূল বেতন ৯০০০টাকা (১৭তম গ্রেড)।১দিনের মূলবেতন ৯০০০+৩০=৩০০ টাকা, অর্থাৎ ১০০ মাইল ট্রেন কাজের জন্য তিনি ৩০০টাকা পান।একই বেতন স্কেলে অন্য কর্মচারীদের TA/DA আরও বেশি।

৯০০ টাকা বেতন স্কেলে একজন অফিস কর্মচারী সপ্তাহে ০২ দিন বন্ধ ভোগ করে মাসে ২২ দিন কাজ করে।মার ০১ দিনের বেতন 000+ ২২ সুতরাং ট্রেন চালকদের দৈনিক বেতন কম – ০৯.০৯-৩০০=১০৯.০৯ টাকা।স্টাফরা মাইলেজের টাকা দিয়ে বাজার করে রানিং রুমে ভাত, পথে চা খান।ট্রেন নিয়ে হেড কোয়ার্টারের বাইরে গেলে তাকে দুই বেলা ভাত তিন বেলা না খেতে হয়।

ঢাকার মতো শহরে এই খাবার খেতে কত ব্যয় হয় তা আপনারা নিশ্চয় আনেন।৩০০ টাকার রানিং স্টাফ ২০০ মাইল কাজ করলে ৬০০ টাকা পেতেন।বর্তমানে অর্থমন্ত্রনালয় তা অর্থ করে ২২৫ ঢাকা স্থির করে দেন।অর্থাৎ ৩৭৫ টাকা কমিয়ে দেন।রানিং স্টাফদের মাইলেস মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত রেলওয়ে কোড ও বিধানে পার্ট অব পে হিসেবে স্বীকৃত।

তাই পেনশন নির্ধারণের সময় মূল বেতনের সাথে যোগ করে পেনশন নির্ধারণ হয়, জিপিএফ এর চাঁদা কৰ্ত্তন হয়।বাংলাদেশের ৫০ বছরেও তাদের মাইলেজের কোন জটিলতা দেখা দেয় নাই।১৯৯২ সালে মাইলেজ নিয়ে অর্থ মন্ত্রনালয় কর্তৃক প্রশ্ন সৃষ্টি করা হলে ০৭/০৭/১৯৯২ ইং তারিখে  অর্থসচিব সহ ০৬ জন সচিবের সমন্বয়ে যৌথ সভায় মাইলেজ রেলওয়ে কোড ও বিধি বিধানের মতে প্রদানের সিদ্ধান্ত আছে ।

পুনরায় ১৯৯৮ সালে অর্থ সচিব,  অর্থমন্ত্রী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নয়া জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সদয় সানুগ্রহ অনুমোদনের মাধ্যমে মাইলেজ যুগ যুগ ধরে প্রচলিত রেলওয়ে কোড ও বিধি বিধান মতে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত দেন। এছাড়াও পেনশনের মাননীয় মহাপরিচালক সিএনএজি কর্তৃক অনুমোদিত আছে।

সম্প্রতি আইবাস++ এ মাইলেজ অন্তর্ভূক্তির সংকট সৃষ্টি হলে ২০২০ হতে আমরা রানিং স্টাফগণ (রেল শ্রমিকলীগ, রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারীর সমিতি, গার্ডস কাউন্সিল ও টিটিই’জ এসোসিয়েশন) সমন্বয়ে রেলওয়ে রানিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদ নামে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি এবং রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির প্যাডে ও নেতৃত্বে লেখালেখি সহ কর্তৃপক্ষের নিকট দেনদরবার করে আসছি।

১৭ জুন ২০২১ইং মাননীয় DG মহোদয়ের সহিত রানিং কর্মচারী সমিতির দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক হয়।তিনি সহসায় বিষয়টি নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন এবং রেলপথ মন্ত্রনালয় অর্থমন্ত্রনালয়কে এবং আমাদের অনুকূলে চিঠি দেন।সর্বশেষ ১৯/১২/২০২১ ইং রেলপথ মন্ত্রনালয় পুনরায় অর্থমন্ত্রনালয়কে রেলওয়ের কোডের অনুকূলে চিঠি দেন।তথাপি উক্ত নির্দেশনা বাতিল হয় নাই।

এসময় আবারও বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদের(পশ্চিমাঞ্চল) পক্ষ থেকে ঘোষণা দেন,মাইলেজ জটিলতা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া না হলে ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি।

IPCS News : Dhaka : আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী।