শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সংবাদ শিরোনামঃ

আন্তরিকতার সাথে দেশের সেবা করতে হবে: শেখ হাসিনা

আপডেটঃ ৪:০০ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ১২, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকতার সাথে দেশের সেবা, দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে নবীন সেনা কর্ম-কর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।রোববার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে, চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ৮১তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সমাপনীতে রাষ্ট্রপতি প্যারেড অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।শেখ হাসিনা বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সক্ষমতা অর্জন করেছে।জাতির পিতার পররাষ্ট্র-নীতি হিসাবে আমরা ‘শান্তিতে বিশ্বাস করি, কারো সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা এই নীতি নয়, “সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব“ এই পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বাস করি।তবে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার সক্ষমতা আমরা ইতোমধ্যে অর্জন করেছি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী দেশে-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দেখিয়ে সব মহলের প্রশংসা অর্জন করেছে।এই সুনাম ধরে রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী নবীন সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের মনে রাখতে হবে, তোমরা এই দেশেরই সন্তান, জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ।তাই সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে, যে কোনো দুর্যোগ ও দুঃসময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।তোমাদের মনে রাখতে হবে, অনেক তাজা রক্ত আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই স্বাধীনতা।

কষ্টার্জিত এই স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করা তোমাদের পবিত্র দায়িত্ব।সব নবীন অফিসারকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকের এ শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তোমাদের ওপর ন্যস্ত হলো দেশের মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব।এ দায়িত্ব পালনে তোমাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

জীবনের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই হবে তোমাদের পেশাগত জীবনের প্রধান ব্রত।বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন একটি আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।বিএমএতে প্রশিক্ষণের সকল প্রকার অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হয়েছে।

তিনি  আশা প্রকাশ করেন, একটি প্রশিক্ষিত ও আধুনিক সেনাবাহিনী গঠনে এই আধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান ও সুযোগ্য নেতৃত্ব তৈরিতে জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তারই সফল বাস্তবায়িত রূপ আজকের এই বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি।

বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালেই প্রণয়ন করেন আমাদের ‘প্রতিরক্ষানীতি।আওয়ামী লীগ সরকার সেই প্রতিরক্ষা-নীতির আলোকেই সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করেছে।সেনাবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে অত্যাধুনিক সাঁজোয়া যান এবং গোলন্দাজ কোরে মাঝারি ও দূরপাল্লার এমএলআরএস রেজিমেন্ট।

আকাশ বিধ্বংসী স্বয়ংক্রিয় সোরাড, ভিসোরাড ও সর্বাধুনিক অরলিকন মিসাইল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আকাশ প্রতিরক্ষায় সূচিত হয়েছে যুগান্তকারী পরিবর্তন।এসব অস্ত্র-সরঞ্জামাদির জন্য প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও বিপুল সংখ্যক নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।এ ছাড়া আরও নানাবিধ অস্ত্র-সরঞ্জামাদি ও ভৌত কাঠামোর সংযোজন ও সম্প্রসারণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার সেনাবাহিনীতে ২০০০ সালে সর্বপ্রথম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে নারী অফিসার নিয়োগ এবং ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম নারী সৈনিক ভর্তির যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।শেখ হাসিনা বলেন, আজ তোমাদের সুসজ্জিত, সুশৃঙ্খল ও আকর্ষণীয় কুচকাওয়াজ দেখে আজ আমি অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছি।তোমাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।

প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং আজকের এই প্যারেডকে সামগ্রিক ভাবে সাফল্য মণ্ডিত করার জন্য একাডেমির কমান্ড্যান্ট, ও সংশ্লিষ্ট সব অফিসারকে ধন্যবাদ জানান।কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের গর্বিত বাবা-মা ও অভিভাবকদের অভিনন্দন জানান।প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে কৃতী ক্যাডেটদের কৃতিত্বের জন্য পুরস্কার দেন।

IPCS News : Dhaka :